বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের

0
31

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অক্ষমতা, মিথ্যা অভিযোগে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে ব্যাপক দায়-মুক্তির কড়া সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, বাংলাদেশে স্বাধীন আন্দোলনে বাধা দেয়া হয়। আছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অক্ষমতা। রাজনৈতিক অংশগ্রহণে গুরুতর ও অযৌক্তিক বাধা। বাংলাদেশে সরকারে আছে মারাত্মক দুর্নীতি। দেশের ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলোর ওপর আছে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ অথবা হয়রানি। সরকারের তরফ থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নিষ্ঠুর নির্যাতন, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ ও শাস্তি দেয়া হয়। আছে জীবনের প্রতি হুমকি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক বন্দি ও আটক। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি এমন অজুহাতে মিথ্যা অভিযোগসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে এসব কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ওই বছরে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা পুনঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই বছরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসনকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বাংলাদেশের হাসপাতালে। এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে ২০০৮ সালের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাকে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে তাকে জেলখানা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২০২০ সালে সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করে গৃহবন্দি করা হয়। রাজনৈতিক বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ও দেশের ভিতরকার আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার তথ্যপ্রমাণে ঘাটতি আছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, তাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য রাজনৈতিক ছক সাজানো হয়েছে। পক্ষান্তরে প্রসিকিউটররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করেছেন। এই রিপোর্টে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার দিকেও দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংবিধান সংবাদ মাধ্যম ও মিডিয়ার সদস্যসহ সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু সরকার এই অধিকারে ঘন ঘন হস্তক্ষেপ করেছে। এক্ষত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সীমাবদ্ধতা আছে। সরকারের হয়রানি অথবা প্রতিশোধ নেয়ার ভয়ে সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্র মিডিয়ার সদস্যরা ও ব্লগাররা নিজেরাই সেন্সর করেছেন। এতে তুলে ধরা হয়েছে সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র, বিচারের ক্ষেত্রে হয়রানি, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তারসহ নানা রকম নিষ্পেষণের কথা। উল্লেখ্য, প্রতি বছর সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সময় গত রাতে এই রিপোর্ট প্রকাশ হয়। তাতে বাংলাদেশ অধ্যায়ে আরও বলা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মিডিয়ার স্বাধীনতায় মারাত্মক বিধিনিষেধ আছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে আছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা সহিংসতার হুমকি। সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় অথবা বিচার করা হয়। সেন্সরশিপ করা হয়। ইন্টারনেট স্বাধীনতায় আছে মারাত্মক বিধিনিষেধ। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অথবা স্বাধীন সমাবেশের ক্ষেত্রেও আছে বড় রকমের হস্তক্ষেপ। আছে সংগঠন, অর্থায়ন ও বেসরকারি এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আছে নিবর্তনমূলক আইন। মুক্তভাবে চলাচলে আছে বিধিনিষেধ। রিপোর্টে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতনের বিষয়ে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সদস্যদের শনাক্তে বা শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেসব যুদ্ধাপরাধ ও নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে তার বিচার করার জন্য ২০১০ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই আদালত শাস্তি দিয়েই যাচ্ছে। এর মধ্যে আছে মৃত্যুদণ্ড। অনেক পর্যবেক্ষক এই প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দেখেন। কারণ, আদালত বিশেষত বাছাই করে অভিযুক্ত করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের। এতে খেয়ালখুশিমতো ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সহ বেআইনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তার তদন্ত নিজেরাই করেছে। তারা এমন সব ঘটনা ঘটিয়েছে যেখানে তাদের শারীরিক মারাত্মক প্রহারে মানুষ আহত হয়েছে অথবা মারা গেছেন। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে কতজন মানুষ মারা গেছেন তার মোট কোনো সংখ্যা সরকার প্রকাশ করেনি। এমনকি এসব ঘটনার স্বচ্ছ তদন্তও করেনি। এই তদন্ত যারা করেছেন তাদের স্বাধীনতা ও পেশাগত মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারা বছরেই আইন প্রয়োগকারীরা তল্লাশি বা রেইড দিয়েছে কথিত সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ড, মাদক ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিরুদ্ধে। কোনো কোনো ঘেরাওয়ের কালে, গ্রেপ্তারকালে সন্দেজজনক কিছু মৃত্যু ঘটেছে। একই ঘটনা ঘটেছে অন্য আইন প্রয়োগকারীদের অপারেশনেও। রিপোর্টে আরও বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে যায় গত বছর। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও শালিশ কেন্দ্র রিপোর্ট করেছে যে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ড, অথবা হেফাজতে থাকা অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে দুজন আইন প্রয়োগকারী এজেন্সির গুলিতে নিহত হয়েছেন। তিনজন নিহত হয়েছেন নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার আগে বা হেফাজতে নেয়ার পর শারীরিক নির্যাতনে। ২৬শে মার্চ সুলতানা জেসমিন র‌্যাবের হেফাজতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন আটক অবস্থায়। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা এটাকে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা এক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে মাথার ক্ষতের কথা তুলে ধরেছে। র‌্যাবের ইউনিটের কমান্ড কর্মকর্তারা মিডিয়াকে বলেছেন, জেসমিন আর্থিক প্রতারণায় জড়িত থাকার জন্য তাকে তুলে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে।
ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করে চাকরিপ্রত্যাশিতদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি একটি রিপোর্ট জমা দেয় আগস্টে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। অক্টোবরে হাই কোর্টের দু’জন বিচারক বলেন, এই রিপোর্ট অস্পষ্ট। গ্রেপ্তার ও আটকের বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা নেই এতে। এমন মন্তব্যের সময়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। ১৮ই মার্চ সাদা পোশাকে র‌্যাব কর্মকর্তারা এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। এতে আহত হন একজন। ওই রিপোর্টে বলা হয়, মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ এবং মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হচ্ছে গুম এবং অপহরণ অব্যাহত আছে। অভিযোগ আছে এসব করছে নিরাপত্তা সার্ভিসের লোকজন। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে একটি স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন রিপোর্ট করেছে যে, এ সময়ে ৩২ জনকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে, তদন্তে বা শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সীমিত উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো রিপোর্ট করেছে যে, জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন যারা তারা বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ভিন্ন মতাবলম্বী। গুমের অভিযোগের পর নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা কোনো রকম অভিযোগ ছাড়া কিছু মানুষকে ছেড়ে দিয়েছে। গ্রেপ্তার করেছে অন্যদের। ফ্রিডম হাউসের ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২৩ কান্ট্রি রিপোর্টে’ উল্লেখ করেছে যে, জোরপূর্বক গুম, গোপন জেলখানার ব্যবহার, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার ও নির্যাতন সহ মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বিষয়ক এজেন্সিগুলো। বছরজুড়ে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে দিতে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যেসব সদস্য অপহরণে জড়িত তাদের বিচারের। ভিকটিমের পরিবারগুলোর সংগঠন মায়ের ডাক র‌্যালি করেছে। বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলেছে, তাদের কোনো সদস্য আইনগতভাবে, প্রশাসনিক, বিচারিক কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। মায়ের ডাক ও স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অধিকারকে হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন জোরপূর্বক ও অনিচ্ছায় গুমের শিকার বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিষয়ক জাতিসংঘের চেয়ার-র‌্যাপোর্টিউর সহ জাতিসংঘের র‌্যাপোর্টিউররা। মার্চে সরকার জানায়, তারা ২৮ জন জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তির বিষয় দেখছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘের কাছে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংখ্যা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে উপস্থাপনের জন্য নাগরিক সমাজের সংগঠনের সমালোচনা করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ দেশে ফেরার একটি ট্রাভেল পাস নিশ্চিত করেন জুনে। তিনি বাংলাদেশ থেকে জোরপূর্বক গুম করার পর বৈধ কাগজ ছাড়া অবস্থানের কারণে ভারতে আট বছর আটকে আছেন। ২০১৫ সালে তাকে ঢাকার বাসা থেকে তুলে নেয় হয়। ভারত সীমান্তের কাছে তাকে ছেড়ে দেয়ার আগে দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন।
প্রতিবেদনে মিডিয়ার স্বাধীনতা অংশে বলা হয়, আইনে ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যকে সীমিত করা হয়েছে। কিন্তু পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিরুদ্ধে কথা বলাকে সরকার বিধিনিষেধ দিয়েছে বলেই মনে হয়। সাংবিধানিক কোনো পরিষদের সমালোচনাকে আইনে ফৌজদারি অপরাধ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে স্বাধীনতা যুদ্ধ, জাতীয় সঙ্গীত বা জাতীয় পতাকার  বিরুদ্ধে প্রাপাগাণ্ডা ছড়ানোর কারণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। সরকারের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে সারাবছরই সরকার ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। আইনমন্ত্রী রিপোর্ট করেছেন যে, সারাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কমপক্ষে ৭০০০ মামলা মুলতবি আছে। আগস্টে সরকার ঘোষণা দেয়, তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পরিণত করবে। পার্লামেন্ট এই আইন পাস করেছে সেপ্টেম্বর মাসে। আইন ও সালিস কেন্দ্র রিপোর্ট করেছে যে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১১৯টি ঘটনায় সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়েছে। আরেকটি মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন বলেছে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর ৩০৯টি হামলা বা হয়রানির ঘটনা ঘটছে। আহত হয়েছেন ১৩৮ জন সাংবাদিক। রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সুনাম নষ্ট করার জন্য প্রিন্ট, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের অভিযোগে প্রথম আলোর সম্পাদক ও একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মার্চে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আওয়ামী লীগ পন্থি একজন আইনজীবি। এ অভিযোগে সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে আটক করে পুলিশ। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। এই আইনকে সংশোধন বা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, নাগরিক সমাজের সংগঠন, সম্পাদক পরিষদ ও রাজনৈতিক দলগুলো।  জুনে জামালপুরে একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সাংবাদিক গোলাম রাব্বানি নাদিমকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ আটক করে আরও কয়েকজনকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here