সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিকে টার্গেট করে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটেছে। ইয়াঙ্গুনে বসবাসকারী বিদেশিদের অবস্থানস্থলের খুব কাছাকাছি এ ঘটনা ঘটেছে। অনলাইন নিক্কিই এশিয়া এ খবর দিয়ে বলছে, রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় এই বিস্ফোরণ হয়। এতে পুরো ইয়াঙ্গুন কেঁপে ওঠে। স্থানীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সামরিক জান্তা বিরোধী গেরিলা গ্রুপগুলো এসব হামলা চালিয়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কান্দাবগিই লেকের দক্ষিণে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই এলাকাটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত মিয়ানমার ইকোনমিক কোরের কর্মকর্তারা বসবাস করেন।
সেনাবাহিনীর জন্য জ্বালানি ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহকারী ও আমদানির দায়িত্বে থাকা নির্বাহীদের টার্গেট করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করা হয়। এতে ৬টি অটোমোবাইল নষ্ট হয়ে গেছে। গাড়ির দরজায় বিদ্ধ হয়েছে শার্পনেল।
এতেই বোঝা যায় বিস্ফোরণ কতটা শক্তিশালী ছিল। বিস্ফোরণের স্থান থেকে ১০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বের মধ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বসবাসকারী এক ব্যক্তি বলেন, আমরা এত জোরে শব্দ শুনতে পেয়েছি যে মনে হয়েছে সেটা কামানের গোলা নিক্ষেপের শব্দ। ওই ব্যক্তির অ্যাপার্টমেন্টেই বসবাস করেন ৪০ জন জাপানি।
ইয়াঙ্গুনের কেন্দ্রীয় এলাকায় একটি নদীতে ১লা মার্চ সেনাবাহনীর জন্য জ্বালানির ব্যবস্থাপনাকারী একটি জাহাজ উড়িয়ে দেযা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর নির্বাসিত সরকারের নির্বাচিত সদস্যরা গঠন করেছেন জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি)। এসব বিস্ফোরণ তাদের নিয়ন্ত্রণে হয়েছে বলে জানিয়েছে। জবাবে সেনাবাহিনী বলেছে, ওইসব জ্বালানি ছিল ডিজেল। এটা কোনোভাবেই যুদ্ধে ব্যবহার করা হয় না।
মোবাইল ফোন বহনকারী ক্যারিয়ারকেও টার্গেট করা হয়েছে। ২৮ শে ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট মাইটেল-এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় একটি প্রতিরোধ যোদ্ধা গ্রুপ। উল্লেখ্য, মাইটেল যৌথভাবে পরিচালনা করে এমইসি এবং ভিয়েতনামের সেনাবাহিনী মালিকানাধীন ভিট্টেল। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মোবাইল সংযোগ পাওয়া বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। চেষ্টা করছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের।
অক্টোবর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা জোরালো করেছে জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপগুলো। তারপর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা হচ্ছে। সেই হামলা এখন ইয়াঙ্গুনেও প্রবেশ করেছে। সেনাবাহিনী মালিকানাধীন বা তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে এখন হামলা করা হচ্ছে বলেই মনে করা হয়।