শেখ হাসিনার রোষানলে, তাই ৫০ কোটি টাকা দিয়েই আপিল করতে হবে ড. ইউনূসকে

0
55

শেখ হাসিনার রোষানল বলে কথা। আইন, আদালত তখন সবই একমুখী হয়ে যায়। শেখ হাসিনার রোষানল থেকে আইন আদালতে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। এটার বড় প্রমাণ এখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ শেখ হাসিনার রোষানলের আইনি প্যাচে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়েই আপিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি (২৯শে ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সই করা হাইকোর্টের ২৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ সেই রায়ের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মূলত আয়কর রিটার্ন নিয়ে এই মামলাটি। শ্রম আদালত হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ড. ইউনূস। এখন তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে আপিল করতে হবে।

এ বিষয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল আবেদন করবেন।

উল্লেখ্য, গত ১২ই ফেব্রুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে ২০১১ থেকে ২০১৩ কর বর্ষের আয়কর আপিল দায়ের করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি বের হয়েছে বৃহস্পতিবার।

গত ২৮শে জানুয়ারি আদালতে উপস্থিত হয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শ্রম আপিল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের অপর তিন কর্মকর্তা। সেই আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে আদালত বলেন, তাদের আইন অনুযায়ী যেটা দেওয়ার সেটাই ড. ইউনূসকে দিতে হবে। এখানে অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলি জানান, ২০১১ থেকে ২০১৩ দুই বছরের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্টকে ২০২০ সালের নভেম্বরে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্ট অর্থ নেই বলে মওকুফ চায়। ওই আবেদন এনবিআর প্রত্যাখ্যান করার পরে তারা আয়করের টাকা মওকুফ চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন তাদের একটি অ্যাকাউন্টেই প্রায় ৩৫০ কোটি থেকে ৪০০ কোটি টাকার মতো ছিল। কিন্তু অ্যাকাউন্টে অর্থ রয়েছে জানিয়ে এনবিআর অর্থ চেয়ে নোটিশ করে। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম সেই নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। রিটের শুনানি নিয়ে নোটিশ কেন বেআইনি বলা হবে না, এ নিয়ে রুলও জারি করেন আদালত।

এরপর গত তিন বছরে বিভিন্ন আদালত ঘুরে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আসে। সেটি শুনানি শেষে গ্রামীণ টেলিকমের রিট আবেদন খারিজ করেন আদালত। সেই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমকে আদেশ দেন নিয়ম অনুযায়ী দাবি করা আয়করের ২৫ শতাংশ টাকা আগে জমা দিয়ে এরপর এনবিআরের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে।

এর আগে গত পহেলা জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান শেখ মেরিনা সুলতানা এক মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস এবং পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও এম শাহজাহানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাদের চার জনকেই ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ২৫ দিন কারাদণ্ড দেন আদালত। আর রায়ের পরই পৃথক জামিন আবেদন করলে চার জনকেই আপিলের শর্তে জামিন দেন আদালত।

২০২১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here