সরকার সাংবাদিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীন অস্তিত্ব বিপন্ন করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যেকোনো সমালোচনাকে আওয়ামী সরকার বিপন্নবোধ করে বলেই, আওয়ামী লীগ সাংবাদিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি, গণমাধ্যমের স্বাধীন অস্তিত্ব বিপন্ন করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাই তারা একের পর এক বন্ধ করছে চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি, আমার দেশ, দৈনিক দিনকালসহ অসংখ্য অনলাইন পোর্টাল। ফলে হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। বাংলাদেশে আজ এমন এক পরিস্থিতি যেকোনো সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেলের মালিকপক্ষে বিরোধী দলের ঘনিষ্ঠজন আছেন জানলে জোরপূর্বক ও অবৈধভাবে সেগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে জনবিদ্বেষী সরকার।
তিনি বলেন, সাংবাদিক নির্যাতনের জন্য যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী, তারা প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি বা প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলে, সেই কারণেই বিচারের আওতামুক্ত থাকে, আওয়ামী আইন ও বিচার এদের স্পর্শ করতে পারে না। এভাবেই দেশে তৈরি করা হয়েছে এক নৈরাজ্যময় ভীতিকর পরিবেশ।
রিজভী বলেন, সাংবাদিকদের ওপর সংঘঠিত এসব হামলা-মামলা ও নিপীড়ন-নির্যাতন প্রতিরোধে, প্রশাসনিক ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততা এবং কোনো-কোনো ক্ষেত্রে তাদের সরাসরি প্রশ্রয় প্রমাণ করে যে, জাতীয় থেকে স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতাধররা নিজেদের দুর্নীতি-অন্যায় লুকিয়ে রাখতে বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করছে। গণমাধ্যমের সাংবাদিকসহ বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কেউ রাষ্ট্রপতির পদক, পদোন্নতী এবং গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং লাভ করে।
তিনি আরও বলেন, সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের এক যুগ আজ পেরিয়ে গেলো। অথচ আজও তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হলো না, খুনিদের শনাক্ত করা হলো না, বিচারের ন্যূনতম উদ্যোগ নেয়া হলো না। বিএনপির পক্ষ থেকে, আমরা এই স্বেচ্ছাচারী রহস্য উন্মোচনের দাবি জানাই, সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাই। আমরা চাই, প্রতিটি সাংবাদিকের নিরাপত্তা, তাদের পেশাগত স্বাধীনতা। চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অনিবার্য বিজয়ের মাধ্যমে স্থাপিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে, সাগর-রুনি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে, আমরা সকল সাংবাদিকের নিরাপত্তা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করবো, ইনশাআল্লাহ।