ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর আপিল চলার সময় একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সম্মত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
দুদকের একটি মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া ও তার বিরুদ্ধে করা শ্রম আইনে চলমান মামলাগুলোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ‘ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র পাঠানো এক ইমেইলের জবাবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র এ আহবান জানান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) লক্ষ্য করেছি, শ্রম আইনের অধীনে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অস্বাভাবিক দ্রুততার সাথে পরিচালিত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগপত্র জমা দেওয়া সম্পর্কে মার্কিন মুখপাত্র বলেন, তারা লক্ষ্য করেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন অতিরিক্ত মামলাগুলির জন্য একটি চার্জশিট অনুমোদন করেছে; যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে অন্যান্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতো যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বিগ্ন যে, ‘এই মামলাগুলি ড. ইউনূসকে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশের শ্রম আইনের অপব্যবহার হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে।’
ওই মুখপাত্র তার প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেন, ‘শ্রম ও দুর্নীতিবিরোধী আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে বলে যে ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে তা বাংলাদেশে আইনের শাসন জারি থাকার ব্যাপারে প্রশ্ন জাগাতে ও ভবিষ্যৎ বৈদেশিক বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে পারে বলে বাংলাদেশের এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন।’
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা ও রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি ১২৫ জন নোবেল বিজয়ীসহ ২৪২ জন বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। গত ২৯ জানুয়ারি ওয়াশিংটন পোস্টে এই বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ঘিরে এ নিয়ে তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি পাঠালেন বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা।