গেল সপ্তাহ জুড়ে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সরবরাহে বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। দৈনিক ৫-৬ ঘণ্টা থাকতো না গ্যাস। আর গতকাল একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে সরবরাহ। ফলে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে নগর জীবনে। সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরের কোথাও নেই গ্যাস। আর আকস্মিক এই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে নাগরিক জীবনে। অধিকাংশ বাসায় জ্বলছে না চুলা। বন্ধ হয়ে গেছে বেশির ভাগ সিএনজি পাম্প। এর ফলে শহরে কমে গেছে গ্যাস চালিত গাড়ি। জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি (তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
আকস্মিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গৃহস্থালির কাজকর্মে সবচেয়ে বেশি ব্যাঘাত ঘটছে। কাফকো, সিইউএফএল, শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ চট্টগ্রামের গ্যাসনির্ভর সব শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস নেই ৬৮টি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে। এই সুযোগে ডিজেল ও অকটেন চালিত পরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পাঁচলাইশের হিলভউ এলাকার বাসিন্দা আবু রোহামা মানবজমিনকে বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত গাড়ি রাস্তায় তেমন নেই। সকালে বাসা থেকে একটি পরীক্ষা দিতে বের হয়ে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা পেয়েছি। তাও আবার দ্বিগুণ ভাড়া নিয়েছে। হামজারবাগ এলাকার বাসিন্দা শাহিদা আক্তার সাথী জানান, ‘এমনিতেই এক সপ্তাহ ধরে গ্যাস সমস্যা দিচ্ছিলো। আর সকাল থেকে একেবারেই গ্যাস নেই। এখন শুনেছি লাইনের সমস্যা। এই সমস্যার কথা আগে জানিয়ে দিলে এভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। অনলাইনে অর্ডার দিয়েও খাবার পাইনি। গ্যাস না থাকায় নাকি রান্না হচ্ছে না।’
নগরের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, কোনো পূর্বের ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস নেই। চট্টগ্রামবাসীর জন্য আসলেই দুর্ভাগ্য। দীর্ঘদিন ধরে চলছে গ্যাস সংকট। আর এখন হঠাৎ একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। অন্তত ঘোষণা দিলে তো মানুষ আপাতত বিকল্প কিছু করতে পারতো। এদিকে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘এলএনজি টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ত্রুটি সমাধানের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে এক্সপার্ট আনা হয়েছে। আশা করছি একদিনের মধ্যে লাইন স্বাভাবিক হবে।