ভারত -মালদ্বীপ সম্পর্ক:ছোট রাষ্ট্রের বড় রাজনীতি

0
91

ড.মুহাম্মদ মুইজ্জু।ভারত মহাসাগরের তীরে এক ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।পয়তাল্লিশ বছর বয়সী এই নেতা মালদ্বীপের পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রতিনিধি।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুহাম্মদ মুইজ্জুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ভারতপন্থী মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালেহ।মুহাম্মদ মুইজ্জু মালদ্বীপের রাজনীতিতে চরম ভারতবিরোধী হিসাবে পরিচিত।

মালদ্বীপে ভারতের ৮৮জন সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা আছে।মুহাম্মদ মুইজ্জুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বক্তব্য ছিল জোরালো।প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের ওয়াদা করেছিলেন। সাধারণ ভোটাররা অবশেষে ভারতপন্থী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে পরাজিত করে চরম ভারত বিরোধী মুহাম্মদ মুইজ্জুকে নির্বাচিত করেছে।

নির্বাচনের পর মুইজ্জুও কথা রাখছে।মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতীয় সেনা খুব দ্রুতই প্রত্যাহার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।পনেরই মার্চের মধ্যে মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করার সময় বেধে দেয়া হয়েছে ভারতকে।সম্প্রতি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ড.মুহাম্মদ মুইজ্জু চীন সফর থেকে এসে ভারতকে উদ্দেশ্য করে এক দুঃসাহসিক মন্তব্য করেছেন।তিনি বলেছেন –

“We may be small, but that doesn’t give you the licence to bully us.”

ভারতের মতো বৃহৎ একটি রাষ্ট্রকে মালদ্বীপের মতো এতো ছোট একটি রাষ্ট্র কিভাবে এতো বড় চ্যালেঞ্জ করে বসতে পারলো?কী সেই শক্তি? ডেফিনিটলি বলতে হয় লিডারশীপ। সঠিক নেতৃত্ব। মানুষের ভোটের অধিকার। মানুষ যা চায় তা ভোটের মাধ্যমে তাদের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জানাতে পেরেছে।জনগণের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টরা এমনই হয়।বুক ফুলিয়ে যে কারো সামনে দাঁড়িয়ে যেতে পারে।বলতে পারে আমি তোমাকে মানি না।সে ক্ষেত্রে দেশটা ছোট নাকি বড় সেটা মেটার করে না।মালদ্বীপ ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ মালদ্বীপের তুলনায় অনেক বড় রাষ্ট্র।মালদ্বীপের মতো একটি ছোট রাষ্ট্রে বৃহৎ সাম্রাজ্যবাদী প্রতিবেশীকে চ্যালেঞ্জ করতে পারলে সেটা বাংলাদেশে কেন অসম্ভব হবে? তিনটি ভুয়া নির্বাচনের পেছনে নগ্নভাবে কলকাঠি নাড়ার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির বর্তমান এন্টি ইন্ডিয়ান পলিটিক্স শতভাগ সঠিক সিদ্ধান্ত।জনগম জেগে উঠলে মালদ্বীপের মতো এখান থেকেও নব্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ঝেটিয়ে বিদায় করা সম্ভব।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ড.মুহাম্মদ মুইজ্জু তাঁর দেশকে ভারতের গোলামি থেকে মুক্ত করার যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আমাদের এটি একটি দৃষ্টান্ত।যা অনুসরণ করা
যায়। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয় ড.মুহাম্মদ মুইজ্জুর স্মার্ট পররাষ্ট্র নীতি।ভারতকে মোকাবিলা করতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট এমন এক শক্তির আশ্রয় নিয়েছেন যার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভারতকেও একশো বার ভাবতে হবে।

লেখক :মো:নিজাম উদ্দিন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here