গণেশ উল্টে যাওয়ার ভয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের এমপি ও মন্ত্রীরা জলদি শপথ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তবে মঞ্চের নেতারা মনে করছেন যে, এই শপথ নেয়ায় কিংবা দ্রুত সরকার গঠনে কাজ হবে না। কারণ ৭ তারিখ মানুষ ভোট বর্জন করে নৈতিক যে শক্তি দেখিয়েছে, এটা গণতন্ত্রের শক্তি, মানবিক মর্যাদার শক্তি, ন্যায় বিচারের শক্তি। এটা নতুন গণপ্রতিরোধের সূচনা।
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে ‘৭ই জানুয়ারির প্রহসনের ডামি নির্বাচন বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে’ এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতারা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষ এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে, গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই নির্বাচনকে গ্রহণ করে নাই। সেই ভয়ে এতো জলদি করে এমপিরা শপথ নিলেন, মন্ত্রীরা শপথ নিলো। তাদের ভয় কখন গণেশ উল্টে যায়। কিন্তু এই শপথ নেয়ায় কিংবা দ্রুত সরকার গঠনে কাজ হবে না। কারণ ৭ তারিখ মানুষ ভোট বর্জন করে নৈতিক যে শক্তি দেখিয়েছে, এটা গণতন্ত্রের শক্তি, মানবিক মর্যাদার শক্তি, ন্যায় বিচারের শক্তি। এটা নতুন গণপ্রতিরোধের সূচনা। এর ওপর দাঁড়িয়েই চলমান আন্দোলন নতুন শক্তিতে বলিয়ান হবে।
জনগণের আন্দোলনের মুখেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, ভোট কেন্দ্রগুলো ছিল বিরান ভূমি। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই ভোট বর্জন করেছে। ৫/৭ শতাংশ ভোট করেছে কিনা সন্দেহ। সিইসি ঘুমিয়ে পরেছিলেন। তাকে জাগিয়ে ৪১ শতাংশ ভোটের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যে দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তারা নিজেরাই সাক্ষ্য দিচ্ছে ৭ তারিখে কোন নির্বাচন হয়নি। সরকারি দলের জোট সঙ্গীরা, এমনকি তাদের নিজেদের কেন্দ্রীয় লোকেরাই এখন সাক্ষ্য দিচ্ছেন নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে, সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকেরাও বেকুব হয়ে গেছে। ভোট দিলাম না কিন্তু এতো ভোট পরলো কখন। ফলে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মানুষ বলছে ডামি লীগ। কেউ কেউ বলছেন তামাশা লীগ। মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে তারা ৩ বার তামাশা করেছে। সুতরাং ৭ তারিখের নির্বাচনের ভেতর দিয়ে বাস্তবত দ্বিতীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, লড়াই করেই নিজেদের পাওনা কড়ায় গন্ডায় আদায় করে নিতে হবে। কোন শক্তি ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের লড়াইকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। চলমান আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করে সরকারকে বিদায় করেই ঘরে ফিরতে হবে।
নেতারা বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে সকল দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন করে ভোটের আয়োজন করতে হবে। ইতিমধ্যে রাজপথের ঐক্য গড়ে উঠেছে। যারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন তাদেরকেও জনগণের কাতারে আসতে হবে। জনগণের সম্মিলিত শক্তিতে এই সরকারের মসনদ ভেঙে পড়বে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।