জানুয়ারির ৭ তারিখ নির্বাচনের নামে আওয়ামী লীগের সার্কাস খেলা মঞ্চস্থ হয়েছে এমন অভিযোগ করে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, একদলীয় সরকারের অধীনে সাজানো ‘ডামি’ নির্বাচনে সারা দেশে ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিকেল ৪টার পরে ভোটের খালি বাক্সগুলো কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নিয়ে ব্যালটে ভর্তি গায়েবি বাক্স এনে পরে ভোট গণনা করা হয়েছে। সন্ধ্যায় গায়েবি বাক্সের ভোটে অবৈধভাবে নির্বাচিত এমপিদের নাম ঘোষণা করেন আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও পল্টন এলাকায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে মৌন মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি শেষে নেতারা এসব কথা বলেন।
তারা ‘ডামি’ নির্বাচনে এমপিদের শপথ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এ সরকারের বিদায়ের বার্তা জনগণ ভোট বর্জনের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে। ৭ তারিখ নির্বাচন হয়নি, এটি আওয়ামী লীগের সার্কাস খেলা হয়েছে।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, নির্বাচনী তামাশার পর সরকার এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়তে শুরু করেছে। ভোটারবিহীন, একতরফা নির্বাচনের কারণে বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন বিদেশি পদক্ষেপ আসতে পারে। এতে করে দেশ অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, ৭ তারিখ আওয়ামী লীগের রঙ-তামাশার নির্বাচনী খেলা শেষ হয়েছে। এ খেলায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরাজয় হয়েছে এবং দেশের জনগণ ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা বিজয় অর্জন করেছেন। এখন সময় শুধু শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, এ প্রহসনের নির্বাচনে দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বের কাছে নষ্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের রাজনীতিকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হলো। অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান বলেন, ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী তামাশা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে এমপিদের শপথগ্রহণ ও এ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাই সরকারকে বলব, জনদাবি মেনে অবিলম্বে এই তামাশার নির্বাচন বাতিল ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
মৌন মিছিল শেষে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) হান্নান আহমেদ খান বাবলু, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির একাংশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামি ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শওকত আমিন প্রমুখ।