১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, আগামীকাল ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ হতে চলেছে। এই নির্বাচনে জন-সম্পৃক্ততা না থাকায় আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া হয়ে ভোট কেনা শুরু করেছে। সারাদেশে ‘ডামি’ ও ভাড়াটিয়া এমপি প্রার্থীদের ‘ভোটার কেনার’ অর্থ-উৎসবের প্রতিযোগিতা চলছে।
তারা দাবি করে বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই শনিবার (৬ জানুয়ারি) রাত থেকেই ভোটের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ, আওয়ামী লীগ জানে-তাদের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য একতরফা নির্বাচনে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। তাই রাতের ভোট-ই আওয়ামী লীগের এখন একমাত্র ভরসা।
৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বান এবং একদফা দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ডাকে চলমান হরতালের সমর্থনে শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেসক্লাব, পল্টন এলাকায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নেতারা এসব কথা বলেন।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, এই ডামি নির্বাচনে ভোট দিতে জনগণ আগামীকাল রোববার ভোট কেন্দ্রে যাবে না। এই নির্বাচন জনগণ বর্জন করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিকভাবে পরাজয় হয়েছে। তাই তারা জনগণের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায়। তবে একতরফা নির্বাচনের পরে এই সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। বিদেশিরা এই সরকারের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে। এই কর্মসূচি ঘিরে আওয়ামী লীগ নিজেরাই অগ্নিসন্ত্রাস করে, আর দায় চাপায় বিরোধী দলের উপর। বিএনপি-১২ দলীয় জোট অগ্নিসন্ত্রাস করে না। ক্ষমতাসীনরাই অগ্নি-সন্ত্রাসের জনক।
তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলনে সফল হয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল রোববার জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। জনগণ ভোট বর্জন করবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, এই সরকারের সময় শেষ, চলমান জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে যে কোনো সময় তাদের পতন হবে। জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আগামীকাল রোববার কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবে না।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি নেই। কারণ আওয়ামী লীগ জানে, আগামীকাল রোববার প্রহসনের নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে ভোট দিবে না। একতরফা ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে জনগণ পতনের গ্যারান্টি কার্ড আওয়ামী লীগের হাতে ধরিয়ে দেবে। তাই সরকারকে বলব, অবিলম্বে একতরফা নির্বাচন বাতিল ও পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভাইস চেয়ারম্যান হান্নান আহমেদ বাবলু, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির একাংশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন পারভেজ।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এলডিপির তমিজউদদীন টিটু, এম এ বাশার, আবদুল হাই নোমান, গোলাম মুর্তুজা মানিক, মো. ফরিদ উদ্দিন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মো. ফারুক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতী আতাউর রহমান খান, মাওলানা এম এ কাসেম ইসলামাবাদী, জাগপার অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন, মো. সাজু মিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় দলের বেলায়েত হোসেন শামীম, আল মাসুদ হাসান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির একাংশের মুহাম্মদ আবু হানিফ, উমার আল রাযী, ইমরান হোসেন, যুব জাগপার নজরুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ এলডিপি যুবদলের ফয়সাল আহমেদ, যুব সংহতির নিজাম উদ্দিন সরকার,ছাত্র সমাজের কাজী ফয়েজ আহমেদ, মো. ফাহিম হোসেন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের নিজাম উদ্দিন আল আদনান, হাফেজ খালেদ মাহমুদ, মো. মিকাইল হোসাইন প্রমূখ।