আনন্দবাজারের রিপোর্টঃ শাহের কৌশলেই হাসিনার ‘বুথ লেভেল ম্যানেজমেন্ট’?

0
99

নির্বাচনের আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের ভোট বয়কটের প্রচার উপেক্ষা করে ভোটারদের বুথমুখী করাই বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লীগের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তবে বসে নেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল। ভোটারদের বুথে আনতে ইতিমধ্যেই অভিনব কৌশল নিয়েছে তারা। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে, ২০১৪ সালে বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরে অমিত শাহের ‘বুথ লেভেল ম্যানেজমেন্ট’ তত্ত্বের কথা।

আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদের মোট ৩০০টি আসনে নির্বাচন হবে। সে দিন ভোটারদের বুথে নিয়ে আসার জন্য ইতিমধ্যেই বহুমুখী কৌশল নিয়েছে হাসিনার দল। ধারাবাহিক প্রচার কর্মসূচির পাশাপাশি শুরু হয়েছে, দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য বিভিন্ন স্তরের প্রশিক্ষণপর্ব। তার মধ্যে অন্যতম ‘রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ ক্যাম্পেন’ নামে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এই প্রশিক্ষণে নির্বাচনের দিন ভোটারদের বুথ নিয়ে আসার ব্যবস্থাপনা শেখানো হচ্ছে বলে সে দেশের সংবাদপত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশের শাসকদল সূত্রের খবর, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৩০০টি আসনে প্রায় আড়াই লক্ষ ‘প্রার্থনা কর্মী’র বাহিনী গড়া হবে। তাঁরা ভোটের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে বুথে যাওয়ার অনুরোধ জানাবেন এবং বুথে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।

পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে ‘অফলাইন ক্যাম্পেন’ নামে একটি কর্মসূচিতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘প্রশিক্ষিত প্রচারকর্মীরা’ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার অনুরোধ জানাবেন।
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদার নেতৃত্বাধীন বিএনপি এবং তাদের সহযোগী জামাতে ইসলামি-সহ কয়েকটি দল জাতীয় সংসদের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাগরিকদের কাছে ভোট বয়কটের আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে প্রচারেও নেমেছে তারা। একই পথে হেঁটেছে কয়েকটি বামদলের জোটও। বাংলাদেশ সমাজতন্ত্রী দল (বাসদ), বিপ্লবী কমিউনিস্ট লিগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক পার্টি-সহ একাধিক বাম দল রয়েছে ওই জোটে। ভোট বয়কটকারী দলগুলি নিরপেক্ষ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার ইতিমধ্যেই নির্বাচনে অংশ না-নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলির সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বিরোধীরা এর পর নতুন কৌশলে ভোট বয়কটের প্রচার চালাচ্ছে ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ গড়ে। তার মোকাবিলা করতে এ বার কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করল আওয়ামী লীগ। প্রসঙ্গত, শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরে গোটা দেশে বিজেপির সংগঠনে নতুন পদ্ধতিতে ‘বুথভিত্তিক ব্যবস্থাপনা’য় সক্রিয় হয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে ‘পন্না প্রমুখ’ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তিনি। তাতে ভোটার তালিকার এক একটি পৃষ্ঠায় থাকা ভোটাদাতাদের দায়িত্ব এক এক জন বিজেপি নেতার উপরে থাকত। হাসিনার দলেও স্থানীয় নেতাদের উপর বুথে ভোটার আনতে ‘এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব’ বণ্টন করা হচ্ছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here