দেশে নির্বাচনের নামে ‘যাত্রাপালা’ চলছে : মঈন খান

0
93

আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে ‘যাত্রাপালা’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

তিনি বলেন, আজকে নির্বাচনের নামে প্রকাশ্য ‘গরুর হাটের মতো প্রার্থীদের কেনা-বেচা’ হচ্ছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার। বিশ্বের কোথাও বাহাদুরি করে এভাবে আসন কেনাবেচা ও ভাগাভাগি হয়, কখনো দেখেনি। আজকে নির্বাচনের নামে যাত্রাপালার আয়োজন করছে সরকার। আর নির্বাচন কমিশন যাত্রাপার্টির ভূমিকা পালন করছে। প্রহসনের নামে নির্বাচন নাটক-যাত্রাপালার করে কেউ কোনোদিন ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারবে না।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলে।

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

আয়োজক জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির- এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির- জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণদলের চেয়ারম্যান গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, মহাসচিব আবু সৈয়দ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি, মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আলম বাদল, সাম্যবাদী দলের চেয়ারম্যান কমরেড সৈয়দ ডা. নুরুল ইসলাম, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান শাওন সাদেকী প্রমুখ।

মঈন খান বলেন, সরকার আজকে নির্বাচনের নৈতিকতা খেলায় পরাজিত হয়েছে। তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ১০ শতাংশ ভোট পাবে না। এজন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়। সরকার হুমকি ধামকি দিয়ে সাহস সঞ্চার করে চাইছে, কিন্তু তাদের ভেতরে ভেতরে ভয়ে আছে।

জনগণ নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনার কেউ ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্র যাবেন না। পাতানো নির্বাচন ইতিমধ্যে জনগণ বর্জন করেছে। কারণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের ফলাফল আগেই তৈরি করা হয়েছে। কে কতো ভোট পাবে, কত পার্সেন্ট ভোট পড়লে তা তেরি আছে। কম্পিউটার টিপ দিলেই জেলায় জেলায় চলে যাবে এবং নির্বাচন কমিশনও সেই ফলাফল প্রকাশ করবে। তাই নির্বাচনের বর্জনের পাশাপাশি এই সরকারকে সব ধরনের অসহযোগিতা করতে হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা রাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা রাজতন্ত্র কায়েম করতে চায়। মুখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চান, তাহলে রাজতন্ত্র চান কেনো? সরকার চিরস্থায়ী ক্ষমতা বন্দোবস্ত করতে চায়।

মঈন খান বলেন, বিএনপিসহ ৫৯টি বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা দেশে গণতন্ত্র, মানুষের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। আমরা বাকশাল করি না। লগি-বইঠা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে সরকারকে পতন ঘটাতে হবে- এমন কথায় বিশ্বাস করি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারায় আন্দোলন চলবে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গত দুই মাসে বিএনপি মহাসচিবসহ ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কি অপরাধ? একতরফা নির্বাচন করতে এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে লক্ষাধিক মামলায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে বিরোধী দলের ওপর এমন নির্যাতন হয়নি বলেও দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, এই দেশ শেখ হাসিনা বা কারও একার দেশ নয়। এই দেশে বাকশাল ও প্রথম ভোট ডাকাতি করেছিল তার বাবা। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট হচ্ছে নৌকা, ডামি, বিরোধী ও স্বতন্ত্র প্রাথী সবাই আওয়ামী লীগের। মেনন সাহেব এতোদিন ধরে দালালি করেছেন, আর আজকে আপনাকে বরিশাল পাঠিয়েছে দিয়েছে। ইনু সাহেবের একই অবস্থা। জাতীয় পার্টিকে ২৬ আসনটি দিয়েছে কিন্তু জয়লাভ করতে পাবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ এখানেও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের। আগামী দিনে এদের বিচার করা হবে। বিএনপির ডাকা অসহযোগ আন্দোলন সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সভা শেষে সমমনা জোট নেতাদের নিয়ে নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করে ড. আব্দুল মঈন খান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here