নৌকার বাইরে গিয়ে কেউ গলা উঁচু করে কথা বললে, সেই গলা নামিয়ে দেওয়ার কৌশল আমরা জানি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানের দেওয়া এমন একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ভোটার ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাটে নির্বাচনের প্রচারে যান মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, নৌকার প্রার্থী শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য। শাজাহান খানের ছেলে মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের পক্ষে নৌকায় ভোট চান। সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর টেকেরহাট সংসদীয় মাদারীপুর-৩ আসনের মধ্যে।
ভাইরাল হওয়া বক্তব্যে আসিবুর রহমান খান বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে এই টেকেরহাটে এসেছিলাম নৌকার পক্ষে নির্বাচনি প্রচার করতে। আমাদের প্রিয় মুখ মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান গোলাপ মিয়ার (চাচার) স্বপক্ষে কাজ করার জন্য। কিন্তু একদল সন্ত্রাসী চেষ্টা করেছে এখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে এই টেকেরহাটকে নষ্ট করার পায়তারা চালাচ্ছে।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরও বলেন, যারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাদের কঠোরভাবে জানাতে চাই, আমরা এখনও ঠাণ্ডা আছি, তাই ঠাণ্ডা থাকতে দেন। যদি একবারও মাথা গরম করি, তাহলে আপনি (এক আওয়ামী লীগ নেতার উদ্দেশ্যে বলেন) মাদারীপুর কেন, বাংলাদেশেও থাকতে পারবেন না।
শাজাহান খানের বড় ছেলে আরও বলেন, আমাদের এক কর্মীকে ষড়যন্ত্রকারীরা তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে। এই টেকেরহাটে যদি কোনো রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, নৌকার বাইরে যদি একজনও কোনো রকম কথা বলে, এমনকি গলা উঁচু করে কথা বলার চেষ্টা করে, তাহলে আপনাদের গলা কীভাবে আমরা নামাবো, সেটা আমরা ভালো করেই জানি। এখন সাবধান করে গেলাম, এরপর সামনে আমরা কঠোরভাবে আসব।
নাম না প্রকাশে কয়েকজন জানান, এভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য এই বক্তব্যকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খান জানান, প্রকাশ্যে এমন হুমকির বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ছাড় পাবে না।