দেশে এখন রাজনীতি বলতে কিছু নেই : ড. মঈন খান

0
123

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দেশে বর্তমানে রাজনীতি বলে কিছু নেই। রয়েছে অপরাজনীতি। এখানে ক্ষমতার নামে চলে দখল ও চাঁদাবাজি আর টাকা পাচার। ৫২ বছর আগে দেশের মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল তার মূলে ছিল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। কিন্তু আজ দুটোর কোনোটিই নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী দেশকে ভালোবাসলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিক। জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হলে প্রথম আমি অভিনন্দন জানাবো। নির্বাচনের পর সরকার ৫দিন টিকবে কি না কেউ বলতে পারেন? সুতরাং ২০১৪ সাল আর ২০২৪ সাল কিন্তু এক না।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মহান বিজয় দিবস, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট‘ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও এডভোকেট জয়নুল আবেদীন। আরও বক্তব্য দেন বিএমএ‘র সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল হক, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এ্যাব‘র সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাবের ডা. এম এ সেলিম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. শহীদুল আলম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. শহীদ হাসান, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. জাহানারা লাইজু প্রমুখ।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডা. খালেকুজ্জামান দীপু, ডা. বাছেদুর রহমান সোহেল, ডা. সাজিদ ইমতিয়াজ, ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ডা. মাহবুব শেখ, আহি আহম্মেদ জুবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম তারিক, ঢাবির এসএম হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, যশোর জেলা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জোবায়ের আহম্মেদ প্রমুখ।

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সংকটের সমাধান করতে হবে। সরকার মুখে যা বলে কাজে তা করে না। কাজে যা করে তা বলে না। তারা নিজেদের গণতান্ত্রিক সরকার বলে পরিচয় দেয়। বিএনপিকে বলে সন্ত্রাসী দল! তারা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বার বার বিভ্রান্ত করছে।

তিনি বলেন, এই সরকারের মিথ্যাচার নিজেরাই বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে ক্ষমতায় যেহেতু আছে নির্বাচনের দরকার কী? আজকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার কী ভোট করছে? এটা তো বানরের পিঠা ভাগাভাগির মতো। তারা নিজেরা নিজেরা লাইনে দাঁড়িয়ে জটলা পাকিয়ে দেখাবে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে! আসলে এটাতো কোনো নির্বাচন নয়। আজকে আওয়ামী লীগের জোট-মহাজোটের নেতাদের আসন ভাগাভাগি দেখলেই বোঝা যায় ওটা বানরের পিঠা ভাগাভাগি।

তিনি বলেন, এই সরকারকে যেতেই হবে জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। বিএনপি কিন্তু দেশে জনতার অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। যা সারা দেশে দেখা গেছে। এবার বিজয় শোভাযাত্রার মাধ্যমে সারা ঢাকা কেঁপে উঠবে। রাজপথের কঠোর আন্দোলন ও রক্তের বিনিময়ে হলেও এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। যা বিশ্বের দেশে দেশে এমনটি হয়েছে।

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সঙ্গে আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের কোনো মিল নেই। শুধু সরকারের লোকেরা কথা বলবেন। আর কারও কথা বলার সুযোগ নেই।

অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের সমগ্র মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। একপর্যায়ে সরকার ভয় পেয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ঘটিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, একাত্তর সালে যে চেতনা ও উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেই গণতন্ত্র আজ নেই। আমরা আজও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন করছি। এই আন্দোলনে জয়ী না হলে দেশের সার্বভৌমত্ব বলে কিছু থাকবে না।

প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, আজকে দেশে জনগণের মাঝে ভোট নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। সরকার একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। তবুও এখন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। আসলে নির্বাচন নিয়ে নিত্য নতুন কৌশল আবিষ্কারের জন্য সরকারকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত। তবে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি ৭ জানুয়ারি নির্বাচন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।

ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম বলেন, মাছের পচন যেমন মাথা থেকে শুরু হয় তেমনি বাংলাদেশের পচন শুরু হয়েছে সর্বোচ্চ স্থান থেকে। আর বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে রাজপথে আন্দোলন করছে। ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদেরই হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here