রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগপর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দিতেই ইসি জনবিদ্বেষী সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।
চরমোনাই পীর বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে এধরনের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। মানুষের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেওয়ার এই চক্রান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মতপ্রকাশের অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ উদ্যোগ বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনীতিক সংকটকে আরও ঘণীভূত করবে।
তিনি বলেন, বিরোধীদলবিহীন প্রহসনের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের নামে ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে ডামি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৮ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগপর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি না দেওয়ার দলবাজ ইসির আবেদন আমলে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা দেশে সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে।
মুফতি রেজাউল করিম বলেন, জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখতে দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের ভয়াবহ দুর্গতির মধ্যে নীলনকশার এই অন্যায় পদক্ষেপকে গণমানুষ ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাচ্ছে। ইতোপূর্বে নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন করেছে নির্বাচন কমিশন।
তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনও ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন প্রহসন বা ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোটপ্রদানের মতো আরও একটি প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করছে। জনগণ পরিকল্পিত ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচনকে বর্জন করেছে। ১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই দেশের চলমান সংকট থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে পারে। এ জন্য আমরা ৩টি প্রস্তাবনা দিয়েছি। এই প্রস্তাবনা মেনে নিয়ে দ্রুত ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করুন।
প্রস্তাবনা হলো- ১. বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন ঘোষিত একতরফা তপশিল বাতিল করে গ্রেপ্তার বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
২. বর্তমান বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
৩. কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্য পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনই অধিকতর উত্তম পদ্ধতি; যা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে তা প্রবর্তন করতে হবে।