কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে আলাদা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় চারজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ও রাতে উখিয়ার ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে আলাদা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়। এর আগে একইদিন দুপুরে আরেকজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সি/৭৭ ব্লক এলাকায় ১০/১২ আরসা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ক্যাম্পের এইস/৭৭ ব্লকের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে আবুল কাসেম (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গাকে মাথায় উপর্যুপরি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে আরসার বিরুদ্ধে শান্তি শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন।
অপরদিকে, রাত ৮টার দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৩ ব্লক এলাকায় আরসা ও আরএসও সদস্যদের মাঝে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এসময় আরসা সন্ত্রাসীদের গুলিতে (আরএসও সদস্য) ওই ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. আলীর ছেলে মো. জোবায়ের (১৬) ঘটনাস্থলে নিহত হয় এবং (আরএসও সদস্য) ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৬ মো. শফির ছেলে আনোয়ার সাদেক (২৭) ও জি/৩ ব্লক এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের ছেলে জয়নাল উদ্দিন (২৮) এবং জি/৭ সৈয়দুল বশরের ছেলে আয়াছ (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে আশেপাশের রোহিঙ্গারা আহতদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে অবস্থিত এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আনোয়ার সাদেকের (২৭) মৃত্যু হয়। বাকিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরপরই এপিবিএন ও থানা পুলিশ রাতে সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইমাম হোসেন (৩০) নামে আরেক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়।
সাধারণ রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখাতে আরসা সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করছে। আমাদের প্রাণের নিরপত্তা এখন হুমকীর মুখে। আমরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। রোহিঙ্গা শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এখন সন্ত্রাসী গ্রুপ গুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে প্রশাসন অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে।