দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ জেতেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগও জেতে নাই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে নিজেকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘৭ই জানুয়ারির নির্বাচন: প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। বৈঠকটির আয়োজন করে রাষ্ট্রচিন্তা। আলোচকরা এই নির্বাচনের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন। আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ৭ই জানুয়ারি রাষ্ট্রের অর্থে বাকশালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। একটা সময় ট্যাবু ছিল বিএনপি’র সঙ্গে বামপন্থিরা আন্দোলন করবে না। ইদানীং এই ট্যাবু কিছু পরিমাণে ভাঙছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আর একটিও সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা নাই।
এখন দরকার আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন।
কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে, এ কথা সত্য নয়। আমরা শুরু করেছি মাত্র। এই প্রথম বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছে। এই লড়াই সহজ হবে না। কিন্তু বিজয় আমাদের অনিবার্য। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নাই। রাষ্ট্রচিন্তা এবং গণতন্ত্র মঞ্চসহ সকল বিরোধী দলকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। লেখক রাখাল রাহা বলেন, আপনার কর্মসূচি আরেকজন বাস্তবায়ন করে দেবে, এই দিবাস্বপ্ন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জনগণ এই ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু ডামি আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদ হটানো যাবে না।
ব্র?্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা পিয়াস বলেন, বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর নানা প্রতিযোগিতার মধ্য থেকে আমাদের সর্বোচ্চ ফায়দা নিতে হবে। এজন্য জাতীয় সংহতি দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা নানাভাবে বিভক্ত। বিভক্তি জিইয়ে রেখে আমরা সুবিধা করতে পারবো না। তা আওয়ামী লীগকেই সুবিধা দেবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশরেকা অদিতি হক বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোট নাই মানে কিছুই নাই। কোনো অধিকারই নাই। জনগণ কেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে সাড়া দিলো না তার মনস্তত্ত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে। ক্রমশ ক্রিটিক্যাল চিন্তার পরিসর ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আল রাজীর সভাপতিত্বে এবং আইন গবেষক লোকমান বিন নুরের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক সেলিম খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদুল হক, ইমরান ইমন, হাসিব উদ্দিন হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব গোলাম শফিক প্রমুখ।