বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যে নির্বাচন হয়েছে তা তামাশার নির্বাচন। এটা কোনো সরকার না। কীসের মহাযাত্রা, কী হবে। ওটা সরকারের মরণযাত্রা তারা করছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ থেকে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার উধাও হয়ে গেছে। সরকারের অকথ্য নির্যাতন ও পৈশাচিক অত্যাচারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দি হয়ে এখনো এক দম বন্ধ করা অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। তিনি বলেন, সরকারের অকথ্য নির্যাতন ও পৈশাচিক অত্যাচারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দি হয়ে এখনো এক দম বন্ধ করা অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা না পেয়ে অমানবিক জীবনযাপন করছেন। কয়েক সপ্তাহে কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ।
হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের দুর্বিষহ উৎপীড়নের সঙ্গেই কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাগারের মিল পাওয়া যায়।
আমি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর আহ্বান জানাচ্ছি। রিজভী বলেন, রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ডামি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমিয়ে থেকে নির্বাচনের নামে যেই সংসদের জন্ম দিয়েছেন, আগামীতে দেশে জনগণের ভোটে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠিত হলে জনগণের কাছে প্রতিটি টাকার হিসাব দিতে হবে। এই ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ডামি সরকারের এক ডামি মন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করা হবে।’ এই কথার জবাবে বলতে চাই, যে দেশে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ‘ডামি সরকার’ আর ‘ডামি মন্ত্রী’ থাকে সেই দেশের অনিষ্ট করতে কোনো ষড়যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। জন ম্যান্ডেটহীন ডামি সরকারই যথেষ্ট দেশকে প্রভুদের পদানত ও ধ্বংস করতে। তিনি আরও বলেন, একজন মাত্র ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সার কারণে দেশ থেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার উধাও হয়ে গেছে। মানুষের ভোটের অধিক লুণ্ঠন করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো, দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণই নয় বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এখন বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণই নয় বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এখন বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন যৌথ বিবৃতি দিয়ে গত ৭ই জানুয়ারির ‘ডামি নির্বাচন’ নিয়ে গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন তুলেছে। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের কাছে ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতোই অবৈধ এবং অগণতান্ত্রিক। সংবিধান অনুযায়ী জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়নি। বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩টি রাজনৈতিক দল এবং দেশের প্রায় প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষ ৭ই জানুয়ারির ভুয়া নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে বর্জন করেছে। এরপরও নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, ভোট ডাকাতি, ২০১৮ সালের মতো রাতের বেলায়ও ব্যালটে সিল মারার মতো অপকর্মের আশ্রয় নিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের ‘ডামি প্রার্থীরা’ই এই অভিযোগ করেছেন।