সীমান্তে বিজিবি সদস্যসহ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার প্রতিবাদ না করে সরকারের মন্ত্রীরা ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, লালমনিরহাট সীমান্তে বাংলাদেশি রাফিউল ইসলাম টুকলুকে গতকাল বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। এর ছয় দিন আগে বিজিবি সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। এই হত্যার পর বিএসএফ’র পক্ষ থেকে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয় তা অভিসন্ধিপ্রসূত, উপহাসমূলক এবং নির্জলা মিথ্যাচার। কিন্তু ‘ডামি সরকার’ সীমান্তে অব্যাহত এই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ তো দূরের কথা টু শব্দ পর্যন্ত করার সাহস দেখাতে পারেনি। উল্টো ভারতের তোষামোদিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মন্ত্রীরা। সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে ২০২৩ সালে বিএসএফ ৩০ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। প্রাণহানি ছাড়াও ৩১ জন বাংলাদেশিকে মারাত্মক শারীরিক নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়েছে বিএসএফ। কেবল সীমান্তে পাখির মতো মানুষকে গুলি করে হত্যা নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে লুটপাট, হামলা, ভাংচুর, এমনকি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও কোন প্রতিবাদ করেন না শেখ হাসিনার নতজানু সরকার।
ক্ষমতার জন্য একান্ত বাধ্যগতভাবে গোলামি করছেন তিনি। এটাই কি স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার নমুনা? ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত রয়েছে। আর সমুদ্র সীমান্ত শ্রীলংকার সাথে। এই সবগুলো দেশের সীমান্তেই ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ মোতায়েন আছে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য ৫টি দেশের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ কোনো লোক নিহত হওয়ার কোনো খবর খুব একটা চোখে পড়ে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের এক মুখে দুই কথা বলেন। কিন্তু তার এই দ্বৈততার মধ্যেই প্রকৃত সত্যটি বের হয়ে আসে। তিনি আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে বলেছেন- ‘আমাদের সরকারকে কোন বিদেশি শক্তি বসায়নি’। একই সভায় তার বক্তব্যের আর এক জায়গায় তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে ভারত জোরালোভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, এটি জরুরি ছিল’। আবার তিনি আর একটি সভায় বলেছেন ‘নির্বাচনের সময় ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল, স্বীকার করতেই হবে’। আবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সব অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙেছে’। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়- ভারতের সহযোগিতায় বিনা ভোটে তামাশার নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতা আবারও দখল করেছে। ভারতের প্রতিভু হয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এক সর্বনাশা কর্তৃপক্ষে পরিণত হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব দুর্বল করে একটি ডামি রাষ্ট্র বানানোর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা কার্যকর করছেন তিনি। গ্রেপ্তার ও মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে রিজভী বলেন, গত ৩ দিনে সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ১২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে দুটি। আসামি করা হয়েছে ১২৩ জনকে।