সরকার দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভয়ারণ্য ও বর্বর রাষ্ট্রে পরিণত করে একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর মিরপুরে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহফুজুর রহমান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দেশ গণপ্রজাতন্ত্র হলেও ফ্যাসিবাদীরা দেশকে আওয়ামীতন্ত্রে পরিণত করেছে। রাজপথে কর্মসূচি পালন, বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমবেত হওয়া প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও সরকার জনগণকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
তিনি বলেন, তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে নির্মূল করার জন্য হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। আর সরকারের তত্ত্বাবধানে আয়নাঘর মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক মহাকলঙ্ক। তারা চলমান সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পেটুয়া বাহিনী এ পর্যন্ত ২২ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দিয়ে দেশে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, যা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন। তাই দেশ ও জাতিকে এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বাঁচাতে মাফিয়া সরকারের পতনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সবাইকে দলমত নির্বিশেষ রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
এদিকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের মানববন্ধনে পুলিশ হামলা ও গুলি চালিয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজনকে আটকেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে রোববার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শহিদ ফারুক রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশ আতর্কিত হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং বেশকিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি তাকরিম হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা কলেজ সভাপতি আসিফ তাজওয়ার শিশিরসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমির ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
এ ছাড়া জামায়াত মানববন্ধন করেছে মোহাম্মদপুর, উত্তরা, বাড্ডা, কারওয়ানবাজার এলাকায়।