ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইলেকশন ক্রাইম করেছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের লুটপাট ও মহাদুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য লাগামহীন। রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকার বলেছেন রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরাইলে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার কারণে জিনিসের দাম আরও বেড়েছে। এর মধ্যে আমেরিকা হুথিদের আক্রমণ করলো, এ কারণে অর্থনীতিতে আরেকটা ধাক্কা আসবেই। আমি বলতে চাই ইউক্রেন যুদ্ধসহ কোনো কারণেই বিশ্বের অন্যান্য দেশে দ্রব্যমূল্য বাড়েনি। কারণ মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে কতৃর্ত্ববাদী শাসন কায়েম করে উদ্ভট উন্নয়নের নামে বাংলাদেশে মহাসমারোহে দুর্নীতি আর লুটপাট চলছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। এটি এখন সর্বজনস্বীকৃত।
তিনি বলেন, সরকারদলীয় লোকেরা সমস্ত ব্যাংক লুটে নিয়েছে। মন্ত্রী ও দলীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে সকল পণ্যের মূল্য এখন আকাশচুম্বী। দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা আওয়ামী লীগের লোকজন পাচার করে যাচ্ছে। এক কেজি চালের দামে এক কেজি আলু কেনা যায় না। এ সবজির সিজনেও সকল সবজি একশো থেকে দু’শো টাকার নিচে নয়।
রিজভী বলেন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আকাশ স্পর্শ করছে। মানুষ ক্ষুধার জ্বালায় সন্তান বিক্রি করে আহাজারী করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা সুখস্বর্গের মধ্যে বাস করছে বলেই ক্ষুধার্ত জনগণের সাথে মশকরা করতে তাদের বাধে না। সরকারের মহাদুর্নীতি এবং অর্থ ও সম্পদ পাচারের কারণেই অর্থনীতিতে বারবার ধাক্কা আসছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পরাজিত দলীয় প্রার্থীরাও এ নির্বাচনকে প্রহসন ও তামাশার নির্বাচন বলে অভিহিত করেছে। এ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেশে বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আমাদের উন্নয়নে অংশীদারী দেশগুলোও তামাশার নির্বাচন বাতিল করে নতুনভাবে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। গুম, খুন, সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালিয়ে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ঢুকিয়ে একতরফা নির্বাচন আয়োজন করলেও জনগণ বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুয়া ভোট বর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার এখন তার অস্তিত্ব আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে বিলীন করে দিয়েছে। অন্য দেশের সরাসরি মদদে জনগণের ভোটাধিকার গলাটিপে হত্যা করে ইলেকশন ক্রাইম করেছে আওয়ামী লীগ। তারা এখন তাদের পক্ষে কোনো দেশ নেই সেই হিসাব নিয়ে প্রহর পার করছে। গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বুঝে গেছেন গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং দেশের সমস্ত জনগণ তার বিপক্ষে। এখন তার নিরাপদ প্রস্থানের পথও অতি সংকুচিত হয়ে গেছে। সুতরাং এখন তার ভরসা একনায়কতান্ত্রিক কয়েকটি দেশ এবং আধিপত্যবাদী শক্তির নিকট নতজানু হয়ে থাকা। তবে এভাবে টিকে থাকতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, যুব বিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য জেড মোর্তুজা চৌধুরী তুলা, আমিনুল ইসলাম ও তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।