গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত না করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আর ফাইভ পার্সেন্ট অবৈধ ডামি সরকারের পতন কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি’র (এবি পার্টি) নেতৃবৃন্দরা। তাই রিজার্ভের পতন ও ডলারের দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে এই অবৈধ ডামি সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
বুধবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, আমদানি-রপ্তানির নামে ডলার পাচার ও উচ্চ-দ্রব্যমূল্যে জনগণের চরম ভোগান্তির প্রতিবাদে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির আহ্বায়ক এফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এটা সত্য কিন্তু আসলে কি উন্নয়ন হয়েছে? না কি উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে, সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে রিজার্ভ আজ শূন্য হতে চলেছে। দেশ আজ অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার চোরাবলিতে আটকে গেছে। অর্থনৈতিক এই সংকটে দেশের সবাইকে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে বলেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, পাঁচটি ধানে যদি একটি চাল উৎপাদন হয় তাকে আমরা কি উন্নয়ন হিসেবে গ্রহণ করবো? কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, যা সরকারের বিভিন্ন সিন্ডিকেট সদস্যরা করেছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ কাজ পাচ্ছে না অথচ প্রতিবেশী একটি দেশের হাজার হাজার মানুষ এখানে অবৈধভাবে কাজ করছে, দেশের টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো জবরদখল করে দলীয় লোকজনের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। যার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল জনগণের আমানত যেনতেনভাবে নিজেদের পকেটে ঢুকানো।
দলটির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, এই সরকার কম গণতন্ত্র বেশি উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে দেশের মানুষ ও বুদ্ধিজীবী মহলকে বোঝাতে চেয়েছেন তারা দেশকে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে পরিণত করবেন। তাদের কাছে গণতন্ত্র, মানবাধিকার গুরুত্বপূর্ণ নয়, তথাকথিত উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।
বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে সরকার দলীয় লোকজন ও কিছু আমলা। প্রকৃতভাবে এখন আমরা কি দেখতে পাচ্ছি, দেশে রিজার্ভের পরিমাণ এসে দাড়িয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলারে, যদিও সরকার বলছে এর পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আইএমএফ সহ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ বলছে ব্যবহার যোগ্য রিজার্ভ রয়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, বহু বছর ধরে দেশে ঘাটতি বাজেট দেয়া হচ্ছে, ব্যাংকগুলো আজ লুটপাট হয়ে গিয়েছে। সিপিডি বলছে ৯২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হয়েছে ২৪টি পার্টিকুলার অনিয়মের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশের ব্যাংকের গোচরে হয়েছে। খেলাপি ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার উপরে, যা ২০০৮ সালে ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এই সরকার ক্ষমতা অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকার সুবিধার্থে সরকারি চাকরিজীবীদের খুশী রাখতে তাদের বেতন ভাতা বাড়িয়েছে। শত শত কর্মকর্তাদের বসিয়ে রেখে জনগণের টাকায় বেতন দেয়া হচ্ছে যাদের কোন কাজ নেই। বিদ্যুৎখাতের লুটপাটের বিষয়েতো পৃথিবীতে অনন্য রেকর্ড গড়ার মত। এই সকল অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের মূল কারণই হচ্ছে একটি অনির্বাচিত দখলদার সরকারের ক্ষমতায় বসে থাকা।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরের উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব ও দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন প্রমুখ।