‘সরকারের কাছে একটিই আবেদন- আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন’

0
109

‘আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও। আমার বাবা আসে না। বাবা গুম হয়েছে। আমার কষ্ট হয়’।— এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন বিএনপি নেতা সাজিদুল ইসলাম সুমনের মেয়ে আরোয়া।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মায়ের ডাকের উদ্যোগে গুম হওয়াদের স্বজনদের মানববন্ধনে আরোয়া এ কথাগুলো বলেন।

এর আগে বেলা ১১টায় মায়ের ডাক সংগঠনের সদস্য শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়ালে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। সেখানে সংগঠনটিকে দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। এর পর তারা পদযাত্রা করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যায়।

মানববন্ধনে নিউমার্কেট-সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের নিখোঁজ নেতার বোন মুন্নী বলেন, আমরা শাহবাগে দাঁড়িয়েছিলাম। সরকার কেন আমাদের ভয় পাচ্ছেন? কেন আমাদের টেনেহিঁচড়ে বের করে দিয়েছেন?

বংশাল থানা ছাত্রদলের সভাপতি পারভেজের স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, আজ ১০ বছর ধরে রাস্তায় রাস্তায় স্বামীকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। আমার বাচ্চাকে কেন শাহবাগে গাড়ি থেকে নামতে দেওয়া হয়নি।

বিএনপি নেতা ও ড্রাইভার কাওসারের মেয়ে লামিয়া আক্তার মিম বলে, আজ ১১ বছর আমি আমার বাবাকে দেখি না। বাবাকে ফেরত চাই। তার হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে চাই। শিশু মিমি বলেন, আমি বলতে বলতে ক্লান্ত। আমি আমার পাপাকে ফেরত চাই। আমার পাপাকে ফেরত দিন।

সোহেলের মেয়ে সাফা বলেন, ১০ বছর ধরে আমি আমার বাবাকে দেখিনি। বাবা বলে ডাকতে পারি না। সরকারের কাছে একটিই আবেদন— আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন।

বিএনপি নেতা সুমনের ভাতিজি সাবিহা বলেন, আমি আমার সুমন চাচ্চুকে ফেরত চাই। তার সঙ্গে টেবিলে একসঙ্গে বসে খেতে চাই। মায়ের ডাকের সমন্বয়ক ও সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, শাহবাগের সামনে পুলিশ বাহিনী স্বজনহারা পরিবারগুলোকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরমপর্যায়ে পৌঁছেছে। সাধারণ মানুষকে গুম করা হচ্ছে। খুন করা হচ্ছে। সরকারের সাহস নেই এই সত্য মোকাবিলা করার। তারা আমাদের আওয়াজ বন্ধ করতে পারবে না। যতদিন আমাদের ভাইদের ফেরত না পাব, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আপনাদের কত বুলেট আছে, কত গুলি আছি আমরা তা দেখতে চাই। আজ তিন হাজার ৬৫৩ দিন আমার ভাইয়েরা নিখোঁজ। আমাদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত না পাব, ততদিন আমরা আওয়াজ তুলব। এবং আমরা আমাদের সব ভাইদের ফেরত আনব।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here