লালবাহিনী জানে না পুলিশ

0
92

পরনে খাকি প্যান্ট। গায়ে লাল টি-শার্ট। চোখে কালো চশমা। হাতে ও কোমরে অত্যাধুনিক অস্ত্র। সম্প্রতি রাজবাড়ী জেলার প্রধান সড়কে অস্ত্র হাতে মহড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ছড়িয়ে পড়ে।  জেলা পুলিশের বিশেষ এই গ্রুপকে নিয়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। স্পেশাল টাস্কিং গ্রুপ নামে এই টিম গঠন করেছে জেলা পুলিশ। তবে বিষয়টি জানে না পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশের সাবেক একজন আইজিপি জানিয়েছেন এটা একজন পুলিশ সুপার করতে পারেন না। ওই টিমের নাম ও পোশাক নিয়ে ইতিমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে গঠিত ৩০ সদস্যের দুটি বিশেষ টিম তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বিশেষ এই টহল টিম বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।

রাজবাড়ী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইফতেখায়রুজ্জামান  বলেন, রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক নির্দেশনা এবং তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ একাধিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই স্পেশাল টাস্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। ইতিমধ্যে আমরা পুলিশের নতুন টিম এসটিজি নিয়ে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। তিনি বলেন, টিমটির ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক অস্ত্রের পাশাপাশি বিশেষ পোশাক ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট রয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক যেকোনো নাশকতা এবং তৎপরতার ক্ষেত্রে এটি কাজ করবে। নির্বাচনের পরেও কুইক রেসপন্স টিম হিসেবে এসটিজি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা হচ্ছে ইন্টারনাল ম্যানেজমেন্ট। প্রত্যেক জেলায় পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি কুইক রেসপন্স টিম থাকে। কোনো একটি ঘটনা ঘটলে যাতে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে। রাজবাড়ী পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে স্পেশাল টাস্কিং ফোর্স নাম নয়, কুইক রেসপন্স টিম হিসেবে তারা অন্য সব ইউনিটের মতো কাজ করবেন। লাল গেঞ্জি পরিহিত বিশেষ এই পুলিশের পোশাক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের এই ভিডিওটি আমি দেখেছি। এভাবে তাদের না করার জন্য বলা হয়েছে। এটা তো পুলিশের কোনো অনুমোদিত পোশাক না। সদর দপ্তর থেকে আমরা তাদের বলেছি- পুলিশের অনুমোদিত পোশাক যেটা সেটাই তারা পরবেন। কোনো কারণে যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে তারা সাদা (সিভিল) পোশাকে ডিবি পুলিশের মতো ডিউটি করবেন। সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু এটা পুলিশের কোনো অনুমোদিত পোশাক না।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেন, একজন পুলিশ সুপার তার এলাকায় অপরাধ দমনে যেকোনো কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। তারা পোশাক হিসেবে পুলিশের পোশাক পরবেন। আইনগতভাবে এটা তিনি করতে পারেন না। আইনে বলা আছে পুলিশের পোশাকের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি’র মতো পোশাক পরতে পারবেন। সিভিল কোডে যেটা বলা আছে তাই পরবেন। পুলিশের পোশাক পরা আর বিশেষ ইউনিফর্ম এক কথা না। বিশেষ ইউনিফর্ম তিনি তৈরি করতে পারেন না। রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদকে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here