শিরোপার নিষ্পত্তি হয়ে যেতে পারত শুক্রবারই। লীগের নির্ধারিত শেষ দিনে আবাহনীকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন হতো মোহামেডান। আগে ২ গোল হজম করলেও সাদা-কালোরা এক সময় ৩-২ গোলে এগিয়ে জয়ও দেখছিল। এরপরই অহেতুক এক মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে ওমানের আম্পায়ার আবাহনীর একজনকে এবং মোহামেডানের দুজন খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখান। দুজনের লাল কার্ড মেনে নেয়নি মোহামেডান। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত মোহামেডান খেলতে অস্বীকৃতি জানালে আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করে আম্পায়াররা। আবাহনী ও মেরিনার্সের পয়েন্ট সমান ৩৭ হয়ে যাওয়ায় শিরোপা নিষ্পত্তির প্রশ্নে বাইলজ অনুযায়ী এই দুই দলের মধ্যে প্লে-অফ হওয়ার কথা। আজ বিকাল ৪টায় মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ খেলতে দুই দলকে চিঠি দিয়েছিল লীগ কমিটি। তবে এই দিন প্লে-অফ ম্যাচটি হচ্ছে না, তা নিশ্চিত। এরইমধ্যে আজ প্লে-অফ খেলতে অস্বীকৃতি, অভিন্ন কারণ দেখিয়ে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে দুই ক্লাব।
রোববার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে নারাজ মেরিনার্স-আবাহনী
কারণ, দুই ক্লাবের ৬ জন খেলোয়াড় আগামীকালই বিমানবাহিনীর হয়ে ভারত সফরে যাচ্ছেন। ১লা মে তারা ফিরে এলে ম্যাচটি খেলতে আপত্তি নেই দুই ক্লাবেরই। আবাহনীর ম্যানেজার মাহবুব হারুন বলেন, ‘আমাদের চারজন খেলোয়াড় বিমানবাহিনীর সদস্য। বিমানবাহিনী টুর্নামেন্ট খেলতে ভারত যাচ্ছে। আমাদের যে চারজন বিমান বাহিনী দলের সাথে ভারত যাচ্ছেন, তাদের দুজনই গোলরক্ষক বিপ্লব কুজুর আর সজীবুর রহমান। তাদের ছাড়া আমরা ম্যাচ খেলব কীভাবে! গোলরক্ষক ছাড়া তো আর আমরা খেলতে পারবো না। তাই ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছি ম্যাচটি যেন পরে আয়োজন করা হয়।’ আবাহনীর হকি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব এহসান রানাও প্লে-অফ ম্যাচ খেলার পক্ষে। তিনি বলেন, আমাদের হাই অফিসিয়াল যুগ্ম চ্যাম্পিয়শিপে রাজি নন। তারা প্লে-অফ খেলার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরাও প্লে-অফ খেলতে চাই। তবে রোববার আমাদের পক্ষে খেলা সম্ভব না। আমাদের চার খেলোয়াড় ফিরলে আমরা ম্যচটি খেলতে রাজি।’ আবাহনীর প্রতিপক্ষ মেরিনার ইয়াংস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান উল্লাহ খান রানা বলেন, ‘আমাদের দুজন বিমানবাহিনীর হয়ে খেলতে ভারত যাচ্ছেন। বিদেশি খেলোয়াড়রাও চলে গেছেন। তাই রোববার আমরাও খেলতে পারবো না এই মর্মে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছি।’ উল্লেখ্য, শুক্রবার মোহামেডান ও আবাহনীর ম্যাচটি মারামারি ও লাল কার্ডের কারণে পণ্ড হয়ে যায়। ম্যাচের ১৮ মিনিট বাকি থাকতে লাল কার্ডের প্রতিবাদে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় মোহামেডান। তাতে আবাহনীকে ৫-০ গোলে বিজয়ী ঘোষণা করেন আম্পায়ার। আবাহনীর জয়ে তাদের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৩৭, যা মেরিনার্সের সমান। মোহামেডান জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হতো। তারা যখন না খেলে মাঠ থেকে বেরিয়ে যায়, তখন আবাহনীর বিপক্ষে ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল সাদা-কালো জার্সিধারী দলটি। আবাহনী-মেরিনার্স দুই ক্লাবই ম্যাচটি বিমানবাহিনী দল ভারত থেকে ফিরে আসার পর খেলতে চায়। তাহলে দুই সপ্তাহের ব্যাপার। দুই সপ্তাহ পরে ফেডারেশনের পক্ষে প্লে-অফ ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে লীগ কমিটির সম্পাদক খাজা তাহের লতিফ মুন্না বলেন, ‘দুই ক্লাবের চিঠি আমরা পেয়েছি। সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবো। আমরা চাইবো ম্যাচটি আয়োজন করতে। যদি একান্ত না হয় তখন দেখা যাবে।’ যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হকি লীগের বাইলজে নেই। তবে হকিতে বাইলজের তোয়াক্কা খুব কমই হয়! ১৯৯৮ সালে প্রিমিয়ার লীগ চালুর পর দুবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১০ সালে আবাহনী-মোহামেডান, ২০১৪ সালে আবাহনী-উষা। অতীতে হলে এখন কেন নেয়? এই প্রশ্ন মেরিনার্সের আছে। বল এখন হকি ফেডারেশনের কোর্টে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমরা প্লে-অফ খেলতে বলেছি। এখন দুই ক্লাব খেলতে না চাইলে সভায় বসে সিদ্ধান্ত নেব।’