চুয়াডাঙ্গায় দেশের ও এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডের পাশাপাশি টানা কয়েক দিনের গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। থমকে যাচ্ছে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। সবথেকে বেশি কষ্টে রয়েছেন রোজাদার ব্যক্তিরা। আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে বলছে, রোববার ও সোমবার কমতে পারে তাপমাত্রা। তবে ঈদের দিন (সম্ভাব্য ১১ই এপ্রিল) থাকবে গরমের প্রভাব। চুয়াডাঙ্গায় গত ১লা এপ্রিল থেকে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলমান তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আউলিয়ার রহমান বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু-কিশোর ও যারা রোজা থাকছেন না তাদের ঘন-ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা, ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। এদিকে দেশের সার্বিক তাপমাত্রার বিষয়ে আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান, আগামী রোববার ও সোমবার তাপমাত্রা একটু কমতে পারে। তবে ৯ই এপ্রিল থেকে ফের বাড়বে। ঢাকায় আজ ও আগামীকাল বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। ১১ই এপ্রিল (সম্ভাব্য ঈদের দিন) এর বিষয়ে তিনি বলেন, ঈদের সময় এখন যেমন আছে তাপমাত্রা তেমনই থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এটি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি তাপপ্রবাহের বিস্তার কিছুটা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি এপ্রিল মাসে দুই থেকে চারটি মৃদু থেকে মাঝারি আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আর এক থেকে দু’টি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হতে পারে, ওই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রিতে উঠতে পারে। একই সঙ্গে থাকবে কালবৈশাখীর দাপট। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। উল্লেখ্য, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলা হয় মৃদু তাপপ্রবাহ। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর উষ্ণতা বেড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ।