গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একতরফা ও নজিরবিহীন দখল কায়েমের ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশকে এমন জায়গায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে যে, রাষ্ট্র আজকে ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এরা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার নামে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা গণতন্ত্র ও সার্বজনীন ভোটাধিকারকেই ধ্বংস করেছে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে শহীদ আসাদ স্মৃতিফলকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদের জীবন দান এ অঞ্চলের গণমানুষের মধ্যে এমন এক চেতনার উত্থান ঘটিয়েছিলো যে, আইয়ুব খানের মতো স্বৈরশাসকেরও পতন নিশ্চিত হয়েছিলো। শুধু তাই নয়, এ গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়েই জমিন তৈরি হয়েছিলো ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের।
তিনি বলেন, শহীদ আসাদ একজন রাজনীতি সচেতন ছাত্র আন্দোলনের নেতাই ছিলেন না, তিনি কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। মওলানা ভাসানীর ডাকে যখন এ দেশের বঞ্চিত নিপীড়িত কৃষক জনতা একের পর এক ঘেরাও ও হাট হরতাল পালন করছিলেন, সে সময় শহীদ আসাদ এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন। এ কারণেই শহীদ আসাদের জীবন দান সে লড়াইয়ের প্রেরণাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়, সারা দেশে বিদ্রোহের দাবানল সৃষ্টি হয় এবং সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুবের পতন নিশ্চিত হয়।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এবং ’৬৯ এর গণঅভ্যূত্থানের ৫৫ বছর পর এসে মুক্তিযুদ্ধের যে অঙ্গিকার ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার- তা এমনভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে- মানুষকে ন্যূনতম ভোটাধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একতরফা ও নজিরবিহীন দখল কায়েমের ভোটের মধ্য দিয়ে দেশকে এমন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে যে, রাষ্ট্র আজকে ধসে পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছে।
সাকি বলেন, শহীদ আসাদের চেতনায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সার্বভৌম ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের লক্ষ্যে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জাতীয় পরিষদের সদস্য সেন্টু খান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।