যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমেছে ২৪.৭৫ ভাগ

0
106

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) ২৪.৭৫ শতাংশ কমে ৬.৩৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত এক বছরে মার্কিন বাজারগুলোতে পোশাকের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় ভাটা পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে। এ ছাড়া আমদানি মন্দার কারণে দেশটির আমদানিকারকদের কাছে এখনো পুরানো পোশাকের মজুত থেকে গেছে। গত বছর একই সময়ে এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮.৪৫ বিলিয়ন ডলার।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দেশটির পোশাকের খুচরা বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে পুরানো পণ্যের মজুত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বিক্রেতা ও ব্রান্ডগুলো করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রচুর পোশাক পণ্য আমদানি করেছিল। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি বাড়েনি।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) তথ্য অনুযায়ী, পরিমাণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২৯.৫১ শতাংশ কমে ১.৯৫ বিলিয়ন বর্গমিটারে দাঁড়িয়েছে। গত বছর একই সময়ে এটি ছিল ২.৪১ বিলিয়ন বর্গমিটার। তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এ বছরের অক্টোবরে পোশাকের চালান ৩৬.৫০ শতাংশ কমে ৫৭৮.৩৫ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এ বছরের প্রথম ১০ মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাজারগুলো থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ২২.৭১ শতাংশ পর্যন্ত কমে ৬৭.২৬ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। গত বছর একই সময়ে যা ছিল ৮৭.০৩ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে রপ্তানির পরিমাণ কমলেও যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিতই আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব বলছে, মার্কিন বাজারের ৯.৫৪ শতাংশ রয়েছে বাংলাদেশের দখলে। অন্যদিকে ২০.৭১ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে রয়েছে চীন। ১৮.০১ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছিলেন, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কম হওয়ার তিনটি কারণ রয়েছে: বৈশ্বিক পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়া, ইউনিটের দাম কমে যাওয়া এবং নভেম্বরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়া। তিনি বলেন, সামনের মাসগুলোতে পোশাক খাতে আবারো সম্ভাবনার কিছু ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। সামনে বড়দিন ও বক্সিং ডে উপলক্ষে কিছু ব্র্যান্ড ইতিমধ্যেই বিনিয়োগের কথা পাকা করেছে। মূল্যস্ফীতি কমতে থাকায় বেশির ভাগ দেশ প্রায় ১৮ মাস পরে সুদের হার বাড়ানো বন্ধ করে দিয়েছে, যা প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারার ভিত্তি তৈরি করে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম ও পরিবহন খরচও কমছে। এটি ব্যবসায়িক মন্দা কাটার আরেকটি ইঙ্গিত।

বিজিএমইএ সভাপতি এর আগে বলেছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পোশাকের বাজারের আকার সংকুচিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশ তার প্রতিযোগীদের চেয়ে ভালো করছে। এ বছর বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য হ্রাসের বিষয়টি উল্লেখ করে ফারুক হাসান বলেন, ২০২৩ সাল পোশাক বাণিজ্যের জন্য অনুকূল বছর হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here