আমরা সবাই কমবেশি মাথাব্যথায় ভুগে থাকি। যখন মাথাব্যথা করে, তখন কোনো কিছুই যেন ভালো লাগে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাথাব্যথার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। আবার এটি রোগের কারণও হতে পারে। তাই এ সম্পর্কে আমাদের সবারই সচেতন হতে হবে।
মাথাব্যথা বলতে আমরা অনেক সময় পুরো মাথার কথা ভাবি। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। যখন মাথাব্যথা শুরু হয়, তখন মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে এ ব্যথা শুরু হয়। তাই আমাদের সবারই জানা উচিত, মাথার কোন জায়গায় ব্যথা করলে সেটি কোন রোগের লক্ষণ। মাঝেমধ্যে মাথাব্যথা করলে এটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে প্রতিনিয়ত মাথাব্যথা করলে তখন সেটি চিন্তার বিষয়। কারণ, এর পেছনে হয়তো কোনো গুরুতর কারণ থাকতে পারে। তাই অবহেলা না করে মাথাব্যথার কারণ সম্পর্কে জানতে হবে।
চলুন, একনজরে দেখে নেওয়া যাক মাথাব্যথার পেছনে কোন কোন রোগ থাকতে পারে :
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কারণ নিয়ে মনের অজান্তেই চিন্তা করি। তখন আমাদের মাথার ওপর বেশি চাপ পড়ে। আর সেখান থেকেই অনেক সময় মাথাব্যথা শুরু হয়, যাকে বলা হয় টেনশন হেডেক। ফলে অনেক সময় ঘাড়ের সামান্য ওপরেও ব্যথা হয়। এ সমস্যার ক্ষেত্রে প্রথমে মাথার পেছনের অংশ ভারী হতে থাকে, তারপর শুরু হতে থাকে ব্যথা। কাঁধ ও গলা শক্ত হয়ে যাওয়াও এ সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টেনশন হেডেক কপালেও হয়। তখন চোখেও সমস্যা শুরু হয়।
চোখের জন্য মাথাব্যথা
আমাদের অনেকেরই চোখের সমস্যা আছে। কারও চোখের সমস্যা ছোটবেলা থেকেই, আবার কারও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু চোখের সমস্যা হলে সেটি আর কেবল চোখেই আটকে থাকে না। চোখের সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাথার সামনের দিকে, অর্থাৎ কপালে ব্যথা হয়। তবে এ ব্যথা কমাতে একটু আরাম করলে বা ম্যাসাজ করলে এ ব্যথা কমে যায়।
সাইনাসের ব্যথা
সাইনাসের ব্যথাও অনেক সময় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। সাইনাস হলো নাক ও চোখের চারপাশে হাড়ের ভেতরে কিছু বায়ুকোষ বা কুঠুরি। এই কুঠুরি মাথা হালকা রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় কোনো সংক্রমণের কারণে মাথার এ অংশে সমস্যা তৈরি হয়। ফলে তৈরি হয় কুঠুরি প্রদাহ, যা থেকে তীব্র মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে মাথাব্যথার পাশাপাশি নাক দিয়ে পানি পড়া, কানের ব্যথা, জ্বর ও মুখ ফুলে যেতে পারে। তীব্র মাথাব্যথার কারণে অনেক সময় মাথা নাড়াচড়া করতেও সমস্যা হয়।
মাইগ্রেন
মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা হয়, এটা আমাদের সবারই কমবেশি জানা আছে। এ সমস্যার কারণে মাথাব্যথা শুরু হলে সেটি সহ্য করা অনেক কষ্ট হয়। অনেকে এ ব্যথার কারণে বিছানা থেকেও উঠতে পারেন না। এ ব্যথা মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে হতে পারে। আবার মাথা থেকে চোখেও চলে আসতে পারে। এ ব্যথার প্রতিঘাত মানুষভেদে আলাদা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাইগ্রেনের ব্যথার পেছনে কিছু ট্রিগার ফ্যাক্টর থাকতে পারে। আলো, শব্দ, গন্ধসহ বিভিন্ন কারণে মাথায় এমন ব্যথা হতে পারে।
ক্লাস্টার হেডেক
দিনের বিভিন্ন সময়ে মাথাব্যথা হলে সেটাকে ক্লাস্টার হেডেক বলা হয়। এতে মাথায় তীব্র ব্যথা হয়। এ ক্ষেত্রে চোখের চারপাশে জ্বলে যাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে। তখন ড্রাই আই, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ও চোখ থেকে পানি পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যার কারণে মাথার যেদিকে ব্যথা হয়, সেদিকের নাক শুষ্ক মনে হয়। সাধারণত এ ব্যথা এক সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।