ভারত ও আওয়ামী লীগের স্বার্থেই শেখ হাসিনাকে থামানো উচিৎ

Date:

টাইমস অব ইন্ডিয়ার -এর মন্তব্য: ভারত ও আওয়ামী লীগের স্বার্থেই শেখ হাসিনাকে থামানো উচিৎ

“বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। কিন্তু বিরোধী দলের অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হচ্ছে। একটি বড় দলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে আগের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত” – টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারের দমনপীড়নের জেরে প্রায় ১৩৯ জন সিনিয়র বিরোধী নেতা ও কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই বিএনপি’র। অবশ্যই, বিরোধীরা কিছু সহিংস বিক্ষোভ সংঘটিত করেছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করতে বাধ্য করা। ২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের দাবিতে রাস্তায় রয়েছে বিএনপি।

তবে যা উদ্বেগ বাড়ায়, তা হলো- এর আগে বিরোধীদের দখলে থাকা জায়গাগুলোতে শূন্যতা।

মূলধারার বিরোধী দলগুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অর্থ হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে উগ্রপন্থিদের পথ করে দেয়া। এটা বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ উভয়ের জন্যই খারাপ। তারপর আছে মার্কিন ফ্যাক্টর। ওয়াশিংটন স্পষ্টতই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং চীনের সঙ্গে তার বৃহত্তর কৌশলগত দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশকে। এর সঙ্গে আছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা তিন মাসের আমদানির জন্য নামমাত্র যথেষ্ট। সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৯.৬ ভাগ ছুঁয়েছে। তাই শেখ হাসিনার ওপর বহুবিধ চাপ তৈরি হচ্ছে। বিরোধী দলের যে অবস্থান থাকা উচিত, তাদেরকে সেই স্থান না দিলে, উগ্রপন্থিদের যে অবস্থান বর্তমানে নেই- তারা সেই অবস্থান তৈরি করে নেবে। ভারতের জন্য এটা ভয়ঙ্কর খবর। একটি উগ্রবাদী বাংলাদেশি এস্টাবলিশমেন্ট পাকিস্তানকে রাজনৈতিক খেলায় ফিরিয়ে আনতে পারে। নিজের এবং শেখ হাসিনার স্বার্থেই তাকে নয়াদিল্লির বলা উচিত পথ পরিবর্তন করতে।

এদিকে আজ এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- এনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এতে তিনি বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করলেন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে রুহুল কবির বলেন, ‘ভারত সরকার ও তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত, বাংলাদেশের জনগণ কেন তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’

আজ রোববার ঢাকার বনানী এলাকায় অবরোধের সমর্থনে মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির আরও বলেন, ‘তাদের (ভারত) উচিত বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, সেটিকে সমর্থন দেওয়া।’

সপ্তম দফায় অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে আজ সকালে রাজধানীর বনানী এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির এবং সেখানে সমাবেশে তিনি বক্তব্য দেন। ভারতের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা মূলত সমালোচনা করেন বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অবস্থানের।

এই মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা জেলা বিএনপি।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গুলিতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনা, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ভারসাম্য না থাকাসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বাধিক পঠিত

আরো পড়ুন
সম্পর্কিত

টানা ৩ দিন ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি...

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধ:পতনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতার নাটকীয় অধ:পতনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ...

সৌদি পৌঁছেছেন ৬৭ হাজার বাংলাদেশি হজযাত্রী

পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সৌদি...

সবজিতে আগুন, মুরগি-খাসির দামেও ক্রেতাদের ক্ষোভ

রাজধানীর বাজারগুলোয় বেড়েছে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। সবজি থেকে শুরু...