বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ এখনও আছে। তাছাড়া বাংলাদেশের চলমান ভয়ের সংস্কৃতিতে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করতে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, বর্তমান আন্দোলন শুধু বিএনপি কেন্দ্রিক। আন্দোলন সফল করতে সরকার বিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ আয়োজিত আসন্ন নির্বাচন ও ভবিষ্যতের পথরেখা শীর্ষক ওয়েবিনারে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তারা।
বিডস আয়োজিত ওয়েবিনারে প্যানালিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ড. বদিউল আলম মজুমদার, ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্ট্রিংগুইসড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের পরামর্শক জ্যোতি রহমান। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন রবার্ট মরিস ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী ইমরান আনসারী।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আওতায় সরকার নির্বাচন আয়োজন করছে, এটি অবৈধ। এ ছাড়া সংসদ না ভেঙ্গে আরেকটি সংসদের নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য। তিনি মনে করেন, এখনো সময় আছে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করার।
ড. আলী রীয়াজ বাংলাদেশের নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপের বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের শুরুতেই নির্বাচনে আমরা বিদেশী হস্তক্ষেপ লক্ষ করি। রাশিয়া, চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কমবেশি সব নির্বাচনে দেখা গেছে। তবে ২০১৪ , ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করার মতো। এটি সরকারের মন্ত্রীদের বিভিন্ন বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।
তিনি মনে করেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর অর্থনৈতিক স্বার্থে সরকারকে চীনমূখী হতে হবে। তবে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনই শেষ কথা নয়। জনবিক্ষোভের মাধ্যমেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় হবে বলে মনে করেন ড. আলী রীয়াজ। আর এ জন্য দেশের ডান বাম মধ্যপন্থী সকল দলকে একই প্লাটফরমে এসে আন্দোলন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। আর এতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করেন তিনি।
অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান মনে করেন, একতরফা নির্বাচনের পর দেশ চরম মাত্রায় অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত হবে। যা গণবিস্ফোরণে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।