গত ১৪ সপ্তাহে ৭৯টি মামলায় ১ হাজার ২৪৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে আইনজীবী ফোরাম বলেছে, সরকার ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১ হাজার ৮৩৫ নেতাকর্মীকে কারাগারে বন্দি করেছে। ‘এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের উল্লেখিত বক্তব্যের প্রতিবাদে শীর্ষক ব্যানারে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে সংবাদ সম্মেলন করে ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া বক্তব্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপিকে ভোটে আনতে সব চেষ্টাই করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এক রাতে সব নেতাকে জেল থেকে মুক্তির প্রস্তাবেও বিএনপি রাজি হয়নি বলে জানিয়েছেন।
রাজ্জাক আরও বলেন, বারবার নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে বিএনপি নির্বাচনে আসলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। শুধু পিছিয়ে দেওয়া নয়, বলা হয়েছে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করলে বাংলাদেশে আজকে হরতালের দিন গাড়ি চলত না। বিকল্পও ছিল না। যেটি করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করেই করেছি। তাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যেত।
লিখিত বক্তব্যে কায়সার কামালের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতার এ বক্তব্যই প্রমাণ করে যে রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো শেখ হাসিনার সরকার কিভাবে করায়ত্ত করেছে।
লিখিত বক্তব্যে, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের এ অকপট বক্তব্য আসলে ‘ফ্যাসিস্ট সরকার’ কর্তৃক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আজ্ঞাবহ করার এক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। তার বক্তব্যে প্রতিভাত হয়েছে জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে আপসহীন আন্দোলন বিএনপি চালিয়ে যাচ্ছে, সেই আন্দোলন স্তব্ধ করার জন্য বর্তমান সরকার ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১ হাজার ৮৩৫ নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে কারাগারে অন্তরীণ করেছে।
গত ১৪ সপ্তাহে ৭৯টি মামলায় এক হাজার ২৪৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে।
কারাগারে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা ও সবপর্যায়ের কর্মীরা সরকারের এ ধরনের প্রস্তাবকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান কায়সার কামাল।
তিনি বলেন, আমরা আইনজীবী সংগঠন হিসেবে সরকারের এহেন হীন এ স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং ধিক্কার জানাচ্ছি। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আজ্ঞাবহ করেছে নতুবা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী, সহ-সভাপতি এম বদরুদ্দোজা, যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস ও ফোরামের সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।