প্রথম পতাকার নকশাকারদের অন্যতম শিব নারায়ণ দাশ আর নেই

0
18

১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে ছাত্রদের পক্ষে পতাকা উড়িয়েছিলেন ছাত্রনেতা তৎকালীন ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রবসহ অন্য নেতারা। দেশ স্বাধীনের আগে এই পতাকার নকশাকারদের অন্যতম ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশ।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

শিব নারায়ণ দাশের একমাত্র ছেলে অর্ণব আদিত্য দাশ তার ফেসবুকে জানিয়েছেন, তার বাবা সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে মারা গেছেন। তিনি তার বাবার জন্য সবাইকে প্রার্থনা করতে বলেছেন। জাতীয় পতাকার সবুজ জমিনে বাংলাদেশের যে হলুদ মানচিত্রটি ছিল, তা অঙ্কন করেছিলেন শিব নারায়ণ দাশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কথা হয়েছিল অর্ণব আদিত্যের সঙ্গে। তিনি বলেছিলেন, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তার বাবা শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে গতকাল রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।

অর্ণব আদিত্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে বা সেই সময় প্রথম জাতীয় পতাকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত যাঁরা বেঁচে আছেন, তারা এই পতাকার নকশাকার হিসেবে আমার বাবার নাম বলেছেন। তবে বাবা সব সময় বলতেন, দেশের মানুষের প্রয়োজনে তিনি তখন দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই এটা নিয়ে প্রচার চাইতেন না। কে স্বীকৃতি দিল না দিল তা নিয়েও মাথা ঘামাতেন না। অসুস্থ থাকার সময়ও এ নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।’

২০২৩ সালে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্রনেতা হাসানুল হক ইনু, কাজী আরেফ আহমেদ, শিব নারায়ণ দাশসহ ২২ জন পতাকার নকশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দিয়ে কামরুল হাসানের ডিজাইন করা লাল–সবুজের পতাকাটিই বাংলাদেশের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশের স্ত্রী গীতশ্রী চৌধুরীও বীর মুক্তিযোদ্ধা। শিব নারায়ণ দাশের বাবা সতীশ চন্দ্র দাশকে ছেলে মুক্তিযুদ্ধে গেছে এই অপরাধে পাকিস্তানি হানাদাররা গুলি করে মেরে ফেলে।

অর্ণব আদিত্য আগে বেসরকারি এয়ারলাইনসে কাজ করতেন। দুর্ঘটনায় কাজটি আর করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি ফ্রিল্যান্সিং করছেন। তিনি গতকাল বলেছিলেন, তাদের বাড়ি বিক্রমপুরে। তবে তার দাদার কাজের সূত্রে তারা কুমিল্লায় স্থায়ী হন। শিব নারায়ণ দাশ রাজনীতি এবং লেখালেখি করে গেছেন সারা জীবন। নিভৃতে থাকতে পছন্দ করতেন।

এর আগে সরকার থেকে শিব নারায়ণ দাশের চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা পেয়েছিলেন উল্লেখ করে অর্ণব আদিত্য বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারে হুট করে চিকিৎসা বাবদ লাখ লাখ টাকা খরচ করা বেশ কঠিন। বাবার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় বিভিন্ন সময় বন্ধু–স্বজনেরা এগিয়ে এসেছেন।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here