ভারতের জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট INSAT-3DS, তার প্রথম ডেটা পৃথিবীতে পাঠাতে শুরু করেছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এ ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো শ্রীহরিকোটা থেকে এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। এই অত্যাধুনিক উপগ্রহটি উন্নত ইমেজার এবং সাউন্ডার পেলোড দিয়ে সজ্জিত, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় গতিশীলতার অভূতপূর্ব দৃশ্য এবং অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। ইসরো মহাকাশযান দ্বারা ধারণ করা চিত্রগুলির একটি সেট প্রকাশ করেছে, যা আমাদের পৃথিবী এবং ভারতকে বিশদে তুলে ধরেছে মানুষের সামনে।
ইসরো জানিয়েছে যে ৬-চ্যানেল ইমেজার সরঞ্জাম একাধিক বর্ণালী চ্যানেল বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য জুড়ে পৃথিবীর পৃষ্ঠ এবং বায়ুমণ্ডলের ছবি ধারণ করে। বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলীয় এবং পৃষ্ঠের ঘটনা, যেমন মেঘ, অ্যারোসল, ভূমি পৃষ্ঠের তাপমাত্রা, গাছপালার স্বাস্থ্য, এবং জলীয় বাষ্প সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে এটি সক্ষম। এর আগে INSAT-3D এবং INSAT-3DR ২০০৩ এবং ২০১৬ সালে লঞ্চের পর থেকে আবহাওয়া সংক্রান্ত ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। INSAT-3DS এর ওজন ২২৭৪ কিলোগ্রাম এবং আর্থ সায়েন্সেস মন্ত্রকের দ্বারা এটির অর্থায়ন করা হয়েছে। INSAT-3DS-এর লক্ষ্য হল পৃথিবীর পৃষ্ঠ, মহাসাগর এবং বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণে ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। স্যাটেলাইটের ইমেজার পেলোডটি ছয়টি তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যান্ড জুড়ে উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি ধারণ করে, যা জলীয় বাষ্পের বিষয়বস্তুর মতো গুরুত্বপূর্ণ বায়ুমণ্ডলীয় পরামিতিগুলির বিস্তারিত ভিজ্যুয়ালাইজেশন সক্ষম করে তোলে। কীভাবে বাতাস বইছে, পৃথিবীর পরিমণ্ডলে আবহাওয়ার বদল কীভাবে হচ্ছে, কখন ঘনাচ্ছে মেঘ, সাইক্লোনের সময় শোঁ শোঁ করে হাওয়ার কুণ্ডলী উঠছে- সেসবেরই ত্রিমাত্রিক ছবি তুলে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠিয়েছে স্যাটেলাইট INSAT-3DS।
বছর বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়েই চলেছে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, প্রবল তুষারপাত, বন্যা, ভয়ংকর দাবানল। এমন আবহাওয়ার খামখেয়ালি ও দৌরাত্ম্যেকে হাতের মুঠোয় আনতেই ইসরোর ‘দূত’ INSAT-3DS-কে পাঠানো হয়েছে মহাকাশে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে সহায়তা করার পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ধার অভিযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এটি।
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে