প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সীমান্তে গুলিবিদ্ধ লাশ গুলো প্রমাণ করে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ভূ-খন্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।
তিনি আজ শনিবার বিকাল ৪টায় পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সীমান্তে গত ৭ মে দুইজন নাগরিককে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে তিরনইহাট বাজারে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত গণমিছিল পূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাশেদ প্রধান বলেন, সীমান্ত হত্যা কেন হয়? কার নিদর্শে স্বাধীন বাংলাদেশের উপর ভারতীয় বিএসএফ গুলি চালায়? কেন বাংলাদেশ সরকার সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানাতে পারে না? কথাবার্তা পরিষ্কার আমরা হিল্লি-দিল্লি বুঝিনা। অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। তারপর ভেবে দেখবো বাংলাদেশের জনগণ ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায় কিনা।
তিনি বলেন, ভারত স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশকে নামমাত্র সহযোগীতা করলেও এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারছে না। মূলত ভারতের অভিন্ন টার্গেট বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব দখল করা। শুধু তাই নয়! বাংলাদেশকে টার্গেট করতে গিয়ে ভারত তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি অফিস গুলোতে তাদের পছন্দের আমলাদের বসিয়ে দেশকে তাদের অঙ্গরাজ্য বানিয়েছে। এটাই শেষ নয়! বাংলাদেশে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন হয় ভারতের প্রেসক্রিপশনে! কে-এমপি, কে-মন্ত্রী হবে সেই তালিকাও আসে ভারত থেকে! আর গণভবন হচ্ছে ভারতের পুতুল খেলাঘরের মত। যখন যা ইচ্ছে তাই নির্দেশ করেন এবং এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষুধার্ত কুকুরের মত দেশের অর্থনীতি খেয়ে ফেলেছে। তাই দেশের অর্থনীতির পতন এখন দিনের ঘরে নেমে এসেছে।
আওয়ামী লীগ সরকার আগামী জুন-জুলাই মাসে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দিতে পারবে কিনা জানিনা! তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভের চেয়ে তিন গুণ বেশি বিদেশী ঋণ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভারতের সাথে আওয়ামী লীগের সকল গোলামী চুক্তি হলেও বাংলাদেশ এখনো পানির ন্যায্য হিস্যা পাই না। এই কৃতদাস সরকার ভারতের নির্দেশনায় মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে তেঁতুলিয়ার ২৫ হাজারের বেশি পাথর শ্রমিক আজ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতির কারণে ঘরে ঘরে হাহাকার চলছে।
রাশেদ প্রধান বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। ভোটারবিহীন এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন বলেছেন, নির্বাচন উৎসবমুখর হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ ভোট দিতে যায়নি। বেলা শেষে খালি মাঠে কুকুরের নাচানাচি দেখতে কিছু দর্শক ভোট কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। তবে কেউ ভোট দিতে যায়নি।
পঞ্চগড় জেলা জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী, সহ-সভাপতি মফিদুল ইসলাম মফি, সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আলম বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, পঞ্চগড় সদর উপজেলা জাগপার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া উপজেলা জাগপার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, দেবিগঞ্জ উপজেলা জাগপার সভাপতি তপু ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাশেদীন, আটোয়ারী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান, মোঃ রহমান, উপজেলা জাগপা নেতা মোঃ আলী ফকির, নাজমুল প্রধান, শাহজান আলী, সফর আলী, মোঃ কামাল, মোঃ শহীদ, যুব জাগপা নেতা কামরুজ্জামান কুয়েত, মোখছেদুল আলম, জনি নন্দী, রফিকুল ইসলাম, মোঃ জনি হোসেন, মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম মোল্লা, জাগপা ছাত্রলীগ নেতা এরশাদ, শ্রমিক জাগপার সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন প্রমুখ।
এদিকে তিরনইহাট বাজার সমাবেশ শেষে খয়খাটপাড়া সীমান্তে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার গণমিছিল অগ্রসর হলে বিজিবি ও পুলিশের যৌথ বাধার মুখে পড়ে।