নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, বিদ্যুৎসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ও তার মন্ত্রীরা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়, প্রবাসীদের ভাবনা, সংকট ও সুরক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাজারে আগুন লেগেছে, সরকার কিছুই করতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মজুদ করে তাদের গণপিটুনি দাও। কিন্তু যারা দামের প্রতিবাদ করেছে তাদেরই গণপিটুনি দিয়েছে। জেলখানায় মানুষ মারা যাচ্ছে, সরকার বলছে জন্মালে তো মরবেই। এরকম একটা সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা সাধারণ মানুষকে ভালোবাসে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, বিদ্যুৎসহ সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ও তার মন্ত্রীরা ব্যর্থ হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যার রাখাল হওয়ার যোগ্যতা নাই, সে মন্ত্রী হয়ে বসে আছে। এখানে যারা অন্ধ তারাই সবচেয়ে বেশি চোখে দেখে। আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রী বলেছেন, খেজুর খাওয়ার দরকার নাই বরই খাও, তার তো রাখাল হওয়ার যোগ্যতা নাই।
মান্না বলেন, দুই ধরনের প্রবাসী আছে।
ইউরোপ-আমেরিকার যারা থাকে তাদের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যারা থাকে তারা রেমিট্যান্স পাঠায়, এখানে যারা বক্তব্য দিয়েছেন, তারাই প্রকৃত রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তারা অনেক কষ্ট করে দেশে টাকা পাঠান, জমিজমা-সম্পত্তি কেনেন। দেশে এসে আবার প্রতারিত হন। এই প্রতারণা যে সব সময় সরকার করে তা নয়, অনেক সময় তার আত্মীয়-স্বজনরাও এই কাজ করে। সরকার মূলত প্রবাসীদের বিষয় নিয়ে চিন্তা করে না। বরং প্রবাসীদের পাঠানো টাকা কিভাবে পাচার করতে পারবে, সেই টাকা দিয়ে কিভাবে নিজেদের বাড়ি গাড়ি করতে পারবে- সেই চিন্তা তাদের। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রবাসীদের উপকার হবে না।
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন বলেন, শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বনিম্ন জাহাজ এসেছে। তার মানে আমদানি কমছে। আমদামি কমছে মানে বৈদেশিক মুদ্রা নেই। যদিও সরকার অটো পাস করার পর কেউ কেউ বলছে রিজার্ভ আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। যদিও আমরা সঠিক কোনো তথ্য পাচ্ছি না।
গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের মতো এতো সস্তা শ্রমিক পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যায় না। বিদেশে গিয়েও তারা হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আমরা যদি বলতে পারতাম, আমাদের একজন শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা আর শ্রমিক পাঠাবো না। তাহলে আমাদের শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষিত হতো। তিনি বলেন, যারা দায়িত্বে আছেন দেশ, জাতি এবং প্রবাসীদের স্বার্থে কাজ করুন। সরকার খরচ নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ৪-৫ গুণ বেশি টাকা নিচ্ছে। এরপর শ্রমিকরা বিদেশ গিয়ে আবার ঠিকমতো বেতনও পাচ্ছে না।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ১০টি দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।