বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একই মামলায় শাহজাহান ওমরের জামিন হলো আর অন্যদেরকে জামিন দিচ্ছেনা। এভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে জামিনের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অরাজকতা, নৈরাজ্য আর বিশৃঙ্খলার বৃত্তে জনমানুষকে বন্দী করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কারা সেলগুলো একেকটি শ্বাসরুদ্ধকর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করা হয়েছে। প্রতিটি কারাগারের ভেতরে কারাবিধির সমস্ত সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়ে বন্দী নেতাকর্মীদের ওপর চালাচ্ছে বিভৎস নিপীড়ণ। খাওয়ার কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, কারাগারে প্রতি মুহুর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। কারা হেফাজতে নির্মম নির্যাতনের শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের কারো না কারো মৃত্যুর সংবাদ আসছে। গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতন করে বিএনপির ১৩ জন নেতার মৃত্যু হয়েছে কারা হেফাজতে। প্রত্যেকটি মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
রিজভী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিনা অপরাধে রংপুর কারাগারে বন্দী রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামকে নির্যাতন করে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে। মনোয়ারুলের বাবা ফজলে রহমান, ছোট ভাই হারুনসহ স্বজনরা বলেছেন, ১৩ জানুয়ারি সুস্থ সবল মনোয়ারুলকে পুলিশ দিনের বেলায় বাসা থেকে তুলে থানায় নিয়ে যায়। এরপর সেইদিন আদালতে চালান না দিয়ে পরের দিন রাত পর্যন্ত থানায় আটকে রেখে বর্বরোচিত কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।
তার সমস্ত শরীরে, পায়ে, পিঠে ও মাথায় আঘাতের গভীর চিহ্ন দেখা গেছে। পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে মনোয়ারুলকে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করেছে। মনোয়ারুলসহ কারা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রিজভী।
তিনি বলেন, দেশের আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন-কোর্ট কাচারি-বিচার-আচার সবকিছুই আওয়ামী ডামি সরকার করতলে বন্দী করে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাদের জামিনের সাংবিধানিক ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আদালতে জামিনের জন্য বারবার আবেদন করলেও নানা টালবাহানা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের সাথে আঁতাত করায় একই মামলায় একই ধারায় জামিন মিলেছে শাহজাহান ওমরের, অথচ মহাসচিবসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর জামিন মিলছে না। এটাতে প্রমাণিত হয় সরকারের নির্দেশেই পুলিশ ও আদালত একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও এখনো বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় লাখো নেতাকর্মী মানবেতর অবস্থায় পলাতক জীবন যাপন করছেন। খেয়ে না খেয়ে আদালতের বারান্দায় ধর্না দিচ্ছেন।