বিগত আন্দোলন ব্যর্থতায় ঘুরে দাঁড়াতে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বিএনপির হাইকমান্ড। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনেকটা হতাশায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাই কৌশল পরিবর্তন করে ফের ঘুরে দাঁড়াতে চায় দলটি।
দীর্ঘদিন ধরে চলা সরকার পতন আন্দোলনে কাঙ্ক্ষিত ফল না আসায় দলটির অভ্যন্তরে কৌশলগত পরিবর্তন নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। এরই অংশ হিসাবে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদ পূরণ করা হচ্ছে।
এছাড়া নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে নীরবে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। দলকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা, নিজেদের দাবির পক্ষে দেশে-বিদেশে জনমত তৈরি এবং সংগঠনকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে নানাভাবে কাজ করছেন নেতারা। একই সঙ্গে আন্দোলনও চালিয়ে যেতে চায় দলটি। তবে আপাতত জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
এছাড়া দলের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর দলের শীর্ষ পর্যায়ে এ বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তা হচ্ছে। চলতি বছরেই দলের কাউন্সিল করার কথা চলছে। তা জুন-জুলাইয়ের মধ্যেও হতে পারে।
কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সাধ্যমতো সব সাংগঠনিক জেলায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনও করছে। এতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিদিন ভার্চুয়ালি একাধিক ইফতারে অংশ নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। তার এই বক্তব্য শুনে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন। এছাড়াও ইফতারে একে অন্যের সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়টিও নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
শুধু জেলা পর্যায়ে নয়; উপজেলা, পৌর, থানা ও ইউনিয়নেও ইফতারপূর্ব আলোচনা সভা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উপজেলা পর্যায়ের ইফতারেও ভার্চুয়ালি অংশ নিচ্ছেন।
চলতি বছরে বড় কোনো আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই বিএনপির। তবে ইস্যুভিত্তিক জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি বাড়ানো হবে। এজন্য জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়লেও কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, সামনে গরমকাল আসছে। এ সময় বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়বে। তখন কর্মসূচিও বাড়ানো হবে। তবে সব কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। বিএনপি নেতারা জানান, ঈদের পর যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে যুগপতের কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এখন যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি না থাকলেও শরিকদের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ আছে।