নির্বাচন বর্জনে সবাইকে রাস্তায় নামার ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ

0
118

গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ এক ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছে। এই দেশ রক্ষা করতে হলে আজকে সমস্ত জনগণকে রাজপথে নামতে হবে, সমস্ত জনগণকে বৃহত্তর ঐক্যে আসতে হবে। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বলেছি, আসুন যুগপৎধারায় যার যার অবস্থান থেকে মাঠে নামি। মাঠে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠবে এবং এই ঐক্য গড়ে উঠলে এই যে তখতে-তাউস, এই যে অত্যাচারী শাসন সেটা উড়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ‘একতরফা’ ভোট বয়কটের দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘জনগণকে বলি এই দেশ আমার-আপনার সবার। দেশ রক্ষার ডাক এসেছে। কাজেই আপনার আর বসে থাকার সময় নাই। গুলি ওরা (সরকার) করতে পারে, ভয় ওরা দেখাতে পারে কিন্তু গুলি করে সব মানুষকে তারা মারতে পারবে না। পাকিস্তানি সেনা বাহিনী পারে নাই। কাজেই এই আওয়ামী লীগের সরকার যাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। চুরি-দুর্নীতি-লুটপাট করে যারা দেশটাকে ফোকলা বানিয়েছে, প্রতিদিন যারা আমার-আপনার পকেট থেকে হাজার লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে, সিন্ডিকেট করে, ব্যাংক লোপাট করে। ৭ তারিখের যে তামাশা সেটা বর্জন করতে হবে, বয়কট করতে হবে।’

সাকি বলেন, ‘৭ তারিখের তামাশার নির্বাচনে, ভোটাধিকার হরণ করার নির্বাচনে বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ তারা ভোট দিতে পারে না। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রতি, দেশের নাগরিকদের প্রতি, বর্তমান প্রজন্মের প্রতি যদি সামান্য অঙ্গীকার আমাদের থাকে তাহলে আমরা কেউ এই ভোটকে সহযোগিতা করতে পারি না, এই ভোটকে জায়েজ করতে পারি না।’

নির্বাচন বর্জনে সবাইকে রাস্তায় নামার ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ‘কাজেই আজকে যেভাবে একটা তামাশার নির্বাচন, এভাবে একটা প্রহসনের নির্বাচন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার নির্বাচন যারা আয়োজন করছে এই অবৈধ সরকারকে বাংলাদেশের মানুষকে বলি আপনারা এই অবৈধ সরকারকে অসহযোগিতা করুন। আমাদের গণসংযোগ চলবে, গণমিছিল চলবে। সামনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।’

সাকি বলেন, ‘সরকার জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানাতে চায়। জাতীয় পার্টির যে চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাহেব তার এক-দুই বছরের বক্তৃতায় মনে হয়েছে উনি বোধ হয় জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন। মানুষ একটু নতুনভাবে এই দলটিকে দেখা শুরু করেছিল। কিন্তু তিনি পারলেন না। আমরা শুনেছি, পুলিশ ঘেরাও করে, গোয়েন্দা সংস্থা ঘেরাও করে তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। দেশি-বিদেশি চাপে নির্বাচনে গিয়েছেন।’

‘তারপরে বলেছেন, ভিক্ষার সিট নিয়ে উনি (জি এম কাদের) রাজনীতি করবেন না। অনেকে ভেবেছিলেন, চাপের মুখে উনি হয়ত বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু উনি পারলেন না। ২৬টি আসন নিয়ে সরকারি দলের সাথে সমঝোতা করলেন। এই হচ্ছে বাংলাদেশের বিরোধী দল। এটা কিসের? আপনার কথা অনুযায়ী এটা কি ভিক্ষার আসন। ফলে ভিক্ষার সিট নিয়ে বাংলাদেশে বিরোধী দল তৈরি করে। বাংলাদেশে এরকম একটা তামাশার নির্বাচন করতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ তারা (সরকার) বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, সব বিরোধী দল মোট ৬৩টি দল যারা নির্বাচন বয়কট করেছে তারাও জাতীয় পার্টি আর ওনাদের খুদ-খোর মিত্ররা তারা যেভাবে এক-একেকটি করে আসন ভিক্ষা নিয়েছে সেরকমভাবে না কি আমরা আসন ভিক্ষা নিয়ে ওনাদের অধীনে নির্বাচন করব।

‘এটা বাংলাদেশে হতে দেয়া হবে না। এদেশের নাগরিকের মর্যাদা এই সরকার কেড়ে নিতে চায়। বাংলাদেশের জনগণ বেঁচে থাকতে এরকম জিনিস হতে দেবে না। এই সিট ভাগাভাগি, ভিক্ষার সিট বণ্টন এই নির্বাচনে মানুষ অংশ নেবে না। এটা তারাও বুঝে গেছেন। যার ফলে এখন নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়ে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠি ব্যবহার করে সভা-সমাবেশের ওপরে তারা নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন। এই নিষেধাজ্ঞা জনগণ মানেনি, মানবে না।’

সাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারি পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান ইমন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশের পর তারা মতিঝিল অভিমুখে মিছিল করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here