দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘তেলেসমাতি’ সংসদ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করে
তিনি বলেন, সংসদ চলছে, আজও চলবে। এটা একটা তেলেসমাতি সংসদ। এই সংসদ নিয়ে মুরুব্বিরা বলেন, এটা আওয়ামী লীগের ‘এ’ টিম আর ‘বি’ টিম। এই সংসদে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, এই সংসদ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেনি। তবুও এই সরকার ক্ষমতার জোরে নির্বাচন কমিশনের কারচুপিতে ক্ষমতায় বসে গত মাসের ১০ তারিখে শপথ নিয়ে সরকার গঠন করেছে।
ফারুক বলেন, এই সংসদে না কি একটা বিরোধী দল আছে, তাও ১১ জনের, সেটাও বানিয়ে দিয়েছে বর্তমান সরকারপ্রধান। আমি বলেছি না, ডানে আর বামে ডামি আর ভাই, তারাই সরকার।
সাবেক বিরোধীদলীয় এ চিফ হুইপ বলেন, আবার আওয়ামী লীগের বদন্যতার কারণেই আজকে সংসদে বিরোধী দল তৈরি হয়েছে। এই বিরোধী দল দিয়ে বাংলাদেশের সার্বিক সমস্যার সমাধান হবে না। অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, তাকে সোজা করতে এই সরকার পারবে না। মুরুব্বিরা বলেন, এই সংসদ টিকে থাকতে পারে না, জনগণ বলে এই সংসদ আর টিকে থাকার কথা নয়।
কারা নির্যাতনে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেদেশে মানবাধিকার নাই, সে দেশের সরকারের কারা কর্তৃপক্ষের কথা আমরা বিশ্বাস করতে পারি নাই। আমরা বিএনপি মনে করি, বাংলাদেশের কারাগারে যে ১৫ জন নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছেন তার হিসাব-নিকাশ একদিন আপনাদের দিতে হবে।
‘নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে’ জানিয়ে ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হচ্ছে, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে সেখানে নতুন সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজ-রসুন-চাল-ডাল-চিনির দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর কথা শুনছেন না, আবার তারা সচেতন হচ্ছে, তড়িৎগতিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা কীভাবে রোজগার করা যায়।’
‘সাগর-রুনি হত্যার বিচার প্রসঙ্গে’ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার ঘটনা, সেদিন আমি সংসদে ছিলাম। সেদিন সাহারা খাতুন (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগর-রুনির বিচার করবেন, তদন্ত করবেন, চার্জশিট দেবেন। লজ্জা হয় না, শরম লাগে না। আইনমন্ত্রী আপনি বলেছেন, ৫০ বছর লাগবে। যদি শরম থাকত, জনগণের ভোটে নির্বাচিত মন্ত্রী হতেন। এই কথা কোনোদিনও বলতে পারতেন না। আপনার লজ্জা হওয়া উচিত ছিল। আপনার বক্তব্যের পরের দিন ডিআরইউতে (ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি) সাংবাদিকরা বিক্ষোভ করে। সেদিন আপনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। আপনি পদত্যাগ করেন নাই।’
জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ‘একতরফা’ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এসএম আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক গাফফার হোসেন ডিপটির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির আবদুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, তাইফুল ইসলাম টিপু, এজমল হোসেন পাইলট, কৃষক দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, জাহাঙ্গীর আলম, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক পরিষদের জাহাঙ্গীর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।