দেশে ফেরেনি রপ্তানির প্রায় ১২০০ কোটি ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক

0
109

সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানির ১ হাজার ১৯৯ কোটি বা প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থ দেশে ফেরেনি। দেশিয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ২৫ পয়সা ধরে যার পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ ৩ কোটি মার্কিন ডলার কম এসেছে। যদিও রপ্তানি বেড়েছিল ৩৪৮ কোটি ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) দেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানির পরিসংখ্যান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে।

তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় দেশে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার মানে ওই অর্থবছরের রপ্তানির ১ হাজার ১৯৯ কোটি ডলার দেশে আসেনি। বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ৮৪ শতাংশ তৈরি পোশাক থেকে আসে। ইপিবির হিসাবে, গত অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে গত অর্থবছরে ৩ হাজার ৬৯৫ কোটি ডলার দেশে এসেছে। তার মানে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির ১ হাজার ৪ কোটি ডলার গত জুন পর্যন্ত দেশে আসেনি। একইভাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯১ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হলেও দেশে এসেছে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ১২২ কোটি ডলারের রপ্তানির মধ্যে দেশে ফিরেছে ১৩১ কোটি ডলার। আবার ১১০ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হলেও দেশে এসেছে ৭৩ কোটি ডলার। 

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরে ৭৪৯ কোটি ডলারের সেবা রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৭৪০ কোটি ডলার দেশে এসেছে। অর্থাৎ সেবা খাতের রপ্তানির ৯ কোটি ডলার দেশে আসেনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আমরা আগেও বলেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির হিসাবের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানির অর্থ যতটুকু আসে, বাংলাদেশ ব্যাংক ততটুকু হিসাব করে। অন্যদিকে ইপিবি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড), শর্ট শিপমেন্ট, ডিসকাউন্টসহ বিভিন্ন হিসাব যুক্ত করে পরিসংখ্যান দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির পরিসংখ্যানের পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি কাজ করছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে অনেক কিছু পরিষ্কার হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মেজবাউল হক বলেন, পণ্য রপ্তানি আয় অনেক ক্ষেত্রে পরেও আসে। পুনরায় রপ্তানির মতো ঘটনাও ঘটে।

নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা বেশ কয়েক মাস ধরে বলে আসছি, ইপিবির পণ্য রপ্তানির পরিসংখ্যান নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। অন্যদিকে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককেও অনেক দিন ধরে বলছি, ১২০ দিনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারা রপ্তানি আয় আনছে না তা প্রকাশ করতে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের কোনো তথ্য দেয়নি। ফলে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১০ বিলিয়ন ডলার কেন এল না সেটি ব্যাখ্যা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here