ডিপ্লমেটের বিশ্লেষণ: আগামীতে বাংলাদেশের জন্য কি অপেক্ষা করছে

0
107

দ্যা ডিপ্লমেট পত্রিকাতে আকিব এমডি শাতিল একটি নিবন্ধ লিখেছেন, ২৮ ডিসেম্বর এটা প্রকাশিত হয়। ‘What Lies Ahead for Bangladesh’- নামের এই লেখার শুরুতেই লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা বাতিল হওয়ার ঘটনাটির উল্লেখ করেছেন। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া, যেটাকে ‘থট পুলিসিং’ বলে তার সাথে এই ঘটনার মিলে কথা লিখেছেন জনাব আকিব। একটা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের অনেকগুলো ঘটনার মাত্র একটি এটি। যা শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষকদের মতামতও শুনতে বা বলতে দিতে নারাজ।

লেখাটিতে বলা হয়, তামাশাপূর্ণ নির্বাচনের আর কয়েক সপ্তাহ বাকি আছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী শাসন কতটা বিস্তৃত হতে পারে তার নমুনা মাস খানেক আগে থেকেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যখন প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে তখন থেকে আগামীতে আওয়ামী লীগের চরিত্র কতটা আগ্রাসী হবে তার আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে ইতমধ্যে।

লেখাটিতে বাংলাদেশের autocracy মানে স্বৈরতন্ত্র থেকে totalitarianism মানে কর্তৃত্ববাদে যাত্রার একটা উদাহরণ হিসেবে বিখ্যাত ইতালিয়ান দার্শনিক উমবার্তো একো’র একটি লেখার সূত্র ধরে বলা হয়- সব স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা এবং বাংলাদেশের ‘founding father’ শেখ মুজিবুর রহমানকে পূজনীয় (eternal sovereign) রুপে হাজির করা হচ্ছে। ইতিহাসে তার ভূমিকা নিয়ে কোন দ্বিমত করলে সেটাকে রাষ্ট্রদ্রোহীতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তারা শেখ মুজিবকে ঘিরে একটা কাল্ট তৈরির চেষ্টা করছে। আর এতে গোটা রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাকে লেখাটিতে ‘সামাজিক ধর্ম’- (civil religion) আকারে শেখ মুজিবকে চাপিয়ে দেয়ার তরিকা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে অনেক দিন ধরে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদের দিকে যাত্রার পথকে সহজ করেছে দলটি। এই বিষয়টি প্রথম আলোর সাংবাদিককে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবেদন করায় ভোর রাতে আটক করে জেলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিবরণ দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।

স্বৈরতন্ত্র এমন এক ধরণের শাসন যা সে আপনার অধিকার কেড়ে নিবে। আপনার কি করা ঠিক হবে না তা বলে দিবে। কিন্তু কর্তৃত্ববাদ আপনার কি করতে হবে তাও বলে দিবে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সেটার বিষয়ে সরকারী ভাষ্যের বাইরে কথা বলা যাবে না। -এভাবেই লেখাটিতে স্বৈরতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের মধ্যে পার্থক্য সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এবং লেখাটিতে আশঙ্কা করা হয়েছে, এই দলটির নেতাকর্মীরা এই কর্তৃত্ববাদ কায়েমে মাঠে থাকবে নির্বাচনে যদি মানুষ ভোট না দেয় তবে রাষ্ট্র গরীব মানুষকে যে সুবিধা দেয় তা কেড়ে নিবে। এটাও স্বৈরতন্ত্র থেকে কর্তৃত্ববাদে উত্তরণের একটা সুস্পষ্ট সূচক হিসেবে লেখাটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তৃত্ববাদ মানুষের দ্বিমত করার সুযোগ তো কেড়ে নিবেই, আপনি নীরবও থাকতে পারবেন না। নির্বাচনের পরে দলটি স্বৈরতন্ত্র থেকে সর্বগ্রাসী কর্তৃত্ববাদের দিকে আরও প্রবল ভাবে এগিয়ে যাবে- বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here