দেশে দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলছে ডলার সংকট। এর সঙ্গে ব্যাংক খাতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে তারল্য সংকট। তাই ডলার ও তারল্য সংকট নিরসনে নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন পদ্ধতিতে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো ডলার রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা নিতে পারবে। বুধবার অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের এসব কথা জানান। সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ডলার সোয়াপে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার আছে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য ডলার রেখে টাকা নিতে পারবে। আবার সময় শেষে টাকা ফেরত দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে। অনেক সময় ব্যাংকের কাছে শর্তের অতিরিক্ত ডলার থাকে। সেক্ষেত্রে শর্তের কারণে তাদের সেই ডলার বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
আবার পরবর্তীতে তাদের এলসি পেমেন্টের সময় ব্যাংকগুলো ডলার পাচ্ছে না। এজন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক কারেন্সি সোয়াপের দিকে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এই প্র্যাক্টিস আছে। আমাদের এর আগে এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের সুদের হার আরও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়ে তাদের আগে থেকেই পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা গত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর সংস্কারের জন্য প্রমোট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ) ঘোষণা করেছি। সেখানে সংস্কারের ক্ষেত্রে কীভাবে ব্যাংকগুলোর অবস্থান নির্ণয় করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা দেওয়া আছে।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের ব্যক্তিগতভাবে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। আর যেসব ব্যাংকের অবস্থা একেবারেই দুর্বল তাদের ঋণ বিতরণ, আমানত সংগ্রহ থেকে শুরু করে কার্যক্রমের উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আবার কোনো কোনো ব্যাংকের একীভূত (মার্জার) করেও দেয়া হতে পারে। তবে এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলো যদি তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে তাহলে তো কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা আসবে না বলেও জানান তিনি।
দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সংস্কারের বড় উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামীতে সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হবে। সেইসঙ্গে খেলাপিদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সভার বিষয়ে মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, যেসব ব্যাংকের অবস্থা একেবারেই দুর্বল তাদের ঋণ বিতরণ, আমানত সংগ্রহ থেকে শুরু করে কার্যক্রমের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক একীভূত (মার্জার) করে দেয়াও হতে পারে। তবে এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলো যদি তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে, তাহলে তো কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা আসবে না।