ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বাধাহীনভাবে ত্রাণসহায়তা পাঠাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়েছে। এই প্রস্তাবের ওপর ভোটের পর নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর। ভাষণের একপর্যায়ে গাজার এক কিশোরীর করুণ মৃত্যুর কাহিনী বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাবটি ১৩-০ ভোটে পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদের মোট ১৫ দেশের মধ্যে ১৩ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। শুরুর দিকে এর খসড়ায় গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব রাখা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কারণে যুদ্ধবিরতি কথাটি সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে শুধু মানবিক সহায়তার কথা বলা হয়। প্রস্তাবটি এক সপ্তাহ ঝুলে থাকার পর পাস হলেও এতে যুদ্ধ থামানোর কোনো কথা বলা হয়নি। ফলে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর। ভাষণের একপর্যায়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত কিশোরী দুনিয়া আবু মোহসেন ও তার পরিবারের কথা সামনে নিয়ে আসেন তিনি। তাদের করুণ পরিণতির কথা বলতে গিয়ে কান্না করে দেন তিনি।
রিয়াদ মানসুর বলেন, কিশোরী দুনিয়ার বয়স মাত্র ১৩ বছর। সে ও তার পরিবার নভেম্বরের শেষ দিকে ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় তার পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়। মারা না গেলেও দুই পা হারায় দুনিয়া।
ইসরায়েলি হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলেও ধরে দুনিয়া। এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরও বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার কথা জানায় সে। তবে প্রথমবারের হামলা থেকে রক্ষা পেলেও দ্বিতীয় হামলা থেকে রেহাই পায়নি এই কিশোরী। ইসরায়েলি বোমার আঘাতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমায় সে।