জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতা কর্তৃক আবারও ধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল। রোববার এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, বরাবরের মতোই আবারও নারী নিপীড়নের ঘটনায় উঠে এসেছে ছাত্রলীগের নাম। যেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মানিক একদা ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করেছিল, সেই ক্যাম্পাসেই এবার স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে নারী সমাজের কাছে আতঙ্কের সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। ধর্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। ধর্ষণকান্ডে সহযোগিতাকারীরাও ছাত্রলীগেরই নেতাকর্মী। নেতৃদ্বয় বলেন, গত কয়েক বছরে এই ক্যাম্পাসে নারী লাঞ্ছনা, নারী শিক্ষার্থীর মুখে সিগারেট চেপে ধরা, ইভটিজিং, গাঁজার চাষ, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক চাঁদাবাজি, হত্যাকাণ্ডসহ প্রতিটি অপকর্মে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট যে সন্ত্রাস ও নারী নিপীড়নমূলক অপকর্ম চলছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগও তাদের সেই ঐতিহ্যের ধারা লালন করে চলেছে।
এই অপকর্মে পক্ষপাতদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ জুগিয়ে যাচ্ছে। ফলে অসংখ্য ঘটনায়ই দেখা যাচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে কিছু লোকদেখানো পদক্ষেপ নেয়া হলেও পরবর্তীতে এই সন্ত্রাসী ও নারী নিপীড়কেরা দ্রুতই আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে এবং ছাত্রলীগ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ছত্রছায়ায় তাদের অপকর্মের ধারাবাহিকতা জারি রাখে। তারা বলেন, এসব ঘটনায় যাতে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখোমুখি না হতে হয়, সেকারণেই তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানসিকতাকে ধারণ করা সংগঠন ছাত্রদলকে প্রশাসনের সহযোগিতায় বলপ্রয়োগ করে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে চায়। এতে করে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও নারী নিপীড়নের অপকর্ম অবাধে চালাতে সুবিধা হয়।
সার্বিক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী সমাজ মনে করে, শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস ও নারীদের নিরাপত্তায় শিক্ষাঙ্গনে নিপীড়কদের সংগঠন ছাত্রলীগের কার্যক্রম অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন কিনা, এই বিষয়টি ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে ছাত্রদলের নেতারা শিক্ষার্থীবান্ধব ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণে ঐক্যবদ্ধভাবে নিপীড়কদের সংগঠন ছাত্রলীগকে প্রতিরোধের আহবান জানিয়ে বলেন, যেই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা একসময় ছাত্রলীগের সংঘবদ্ধ ধর্ষক গ্রুপকে প্রতিরোধের মুখে ক্যাম্পাসছাড়া করেছিল, এবারেও একজন গৃহবধূর ওপর নিপীড়নের ঘটনায় সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিতে সোচ্চার থাকবে বলে। এই লড়াইয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অতীতের মতোই সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।