সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি এবার নির্বাচনে নেই। তাদের জোটসঙ্গীরাও নেই। উপযুক্ত বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের বড় একটা অংশের আগ্রহ নেই। ভোট কেন্দ্রে যেতে চাপ সৃষ্টি না করলে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম হবে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কেমন হতে পারে- এমন প্রশ্নে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
সুজন সম্পাদক বলেন, নির্বাচন মানে বিকল্প থেকে বেছে নেওয়া। বিকল্প হতে হবে যথার্থ বিকল্প। এ নির্বাচনে তো কোনো বিকল্প নেই। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের, আওয়ামী লীগের সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সৃষ্টি করা কিংস পার্টির আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনুগত জাতীয় পার্টির প্রতিযোগিতা। এটা তো বিকল্প হলো না। এটা নির্বাচনই না। বিকল্প বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র হয় না। গণতান্ত্রিক নির্বাচনও হয় না বিরোধী দল ছাড়া। এখন যে তথাকথিত নির্বাচন হচ্ছে, তা নির্বাচন নির্বাচন খেলা। নির্বাচনে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনিশ্চয়তা থাকে। ফলাফল ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত কেউ জানে না কে জিতবে। এবার কে জিতবে তা সবার সামনে পরিষ্কার। বাংলাদেশের ইতিহাসে দুটি প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপি মাঠে অনুপস্থিত থাকলে আওয়ামী লীগ সব আসনে জিতবে তা প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়। যেহেতু তারা নিশ্চিত তাই কিছু আসন জোটসঙ্গীদের দিচ্ছে। এখানে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, ভোটের মাঠে অনিশ্চয়তা থাকলেই ভোটার উপস্থিতি বেশি হয়। ভোটার তখন মনে করে তার একটি ভোটও ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে। এবার প্রধান বিরোধী দল ও তাদের জোটসঙ্গীরা নির্বাচন থেকে দূরে। এটা ভোটারদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের ভোটার বা অন্যারাও অনেকে কেন্দ্রে যাবে কি না সন্দেহ আছে। সরকারি দলের ভোটাররা তো জানে তাদের প্রার্থী জিতবে। আবার আমাদের অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে যে, সরকারি দলের সমর্থিত হলেই নির্বাচনে জেতা যায়, তাই যারা নিরপেক্ষ ভোটার তাদের তো কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ থাকার কথা না। এ ছাড়া যেসব সহিংসতা হচ্ছে তাতেও ভোট দেওয়ার আগ্রহ কমবে। অতীতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেনি। এসব কারণে কেন্দ্রে যাওয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমবে। সব মিলিয়ে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ারই আশঙ্কা রয়েছে। তবে বিভিন্ন কৌশলে, চাপ সৃষ্টি করে, কেন্দ্রে কেন্দ্রে লোক নিয়োগ করে মানুষকে আনতে বাধ্য করলে চিত্র বদলাতে পারে। জানা গেছে, কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করতে ভোটারদের বিভিন্ন কার্ড নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাই কী হবে বলা অনিশ্চিত। এ ছাড়া ভোট কাস্ট হলো এক ধরনের, কেন্দ্র থেকে ঘোষণা এলো অন্য কিছু। এ ব্যাপারে অতীত অভিজ্ঞতা তো সুখকর নয়।