তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির এ সময়ে ব্যাংকিং থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়। অনলাইনে কাজের পরিমাণ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আর্থিক প্রতারণা এবং জালিয়াতি।
একটা সময় ফোন করে বিভিন্ন বাহানায় ওটিপি চাওয়া হতো এবং ওটিপি বলে দিলেই সেটি ব্যবহার করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিত স্ক্যামাররা। তবে বর্তমানে অনেকেই এ স্ক্যামের ব্যাপারে জেনে গেছেন এবং অচেনা নম্বর থেকে কল এলে কেউ তাদের কোনো ওটিপি বলতে চান না। এবার তারা প্রতারণা শুরু করেছে ভিন্ন উপায়ে নতুন বেশ কয়েকটি উপায়, যেগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই গ্রাহকদের প্রতারিত করা যায়।
হোয়াটসঅ্যাপে অচেনা বেশ কিছু নাম্বার থেকে পার্টটাইম চাকরির অফার করা হয়। আবার বেশ কিছুদিন ধরেই অনেকের নম্বরে এসএমএস করে চাকরির সাক্ষাৎকারের প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করার কথা জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি রোজ দুই হাজার টাকা আয়ের কথাও বলছে অচেনা নম্বর; সেজন্য লিংকে ক্লিক করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়াও অনেক সময় ফোনের এসএমএসে এমন পার্টটাইম চাকরির অফারের মেসেজ আসে এবং তার সঙ্গে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের লিংক সংযুক্ত থাকে। তবে এ ফাঁদে পড়লেই হারাতে পারেন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ফোনে থাকা ব্যক্তিগত ডেটা এমনকি ফেসবুক আইডিও।
এমন এসএমএস পাওয়া কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা চাকরির কোনো চেষ্টা করেননি, আবেদনও করেননি। সাক্ষাৎকার না দিয়েও এসএমএস আসায় তারা সাড়া দেননি।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ নিজেদের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে ‘সতর্কবার্তা’ দিয়েছে। সতর্কবার্তায় লিংকে ক্লিক না করে এসএমএস মুছে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এসএমএস পাঠানো নম্বরগুলোকে ব্লক করে দিতে বলেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, আপনার মোবাইল অথবা হোয়াটসঅ্যাপে এ রকম স্প্যাম মেসেজ আসতে পারে। প্রলোভন দেখিয়ে হ্যাক করে নিতে পারে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াসহ ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তাই অনাকাক্সিক্ষত মেসেজগুলো এড়িয়ে চলুন।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখার পরামর্শ দিয়ে পুলিশ বলছে, সেই অ্যাকাউন্টে ই-মেইল অ্যাড্রেস সংযুক্ত করুন।
সাইবার অপরাধ ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এডিসি নাজমুল ইসলাম বলেন, চাকরির মেসেজ নিয়ে আমাদের কাছে দু-একটা অভিযোগ এসেছে। আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। হয়তো অচিরেই এ অপরাধীদের শনাক্ত করা যাবে। তার আগে আমরা স্ব-উদ্যোগী হয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছি-যাতে কেউ এ ফাঁদে পা না দেয়।
তিনি বলেন, মানুষের লোভকে পুঁজি করে এমন কনটেন্ট দিয়ে ‘ফিশিং’ করে ব্যাংক বা আর্থিক লেনদেনের তথ্য, সামাজিক মাধ্যমের তথ্য চুরি করে নিতে পারে অপরাধীরা। এ বিষয়ে সচেতন হবে।