দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলন কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সভায় এই কর্মসূচি গৃহীত হয়। পরে জোটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঞ্চের নেতা সাকিব আনোয়ারের ওপর হামলা ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের প্রতিবাদে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করবে। এ ছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক লোপাট ও অর্থ পাচারের প্রতিবাদে ২৮ ফেব্রুয়ারি সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা এই সরকার সর্বত্র ভয়-ত্রাস আর দমন-পীড়ন করে মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার খামারবাড়ি এলাকায় নাগরিক ঐক্যের ‘গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর’ কর্মসূচিতে হামলা করে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারকে গুরুতর আহত করার ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা।
তারা বলেন, হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার এবং গুম-খুনের আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়। অতীতের স্বৈরাচারীদের মতো এই পথে শেষ পর্যন্ত পার পাওয়া যাবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সকল ভয়-ত্রাস মোকাবেলা করে বিজয়ী হবে।
নেতারা বলেন, এই সরকারের লুটপাট ও কতিপয় তোষণ নীতির কারণে দেশের বিদ্যুৎখাত এক ভয়ঙ্কর লুণ্ঠনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তাদের ভুলনীতি এবং দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তার দায় জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে বার বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দুর্নীতি বন্ধ করে ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন ব্যয় কমানো সম্ভব হলেও লুটপাট, দুর্নীতির স্বার্থে সেই দিকে তারা অগ্রসর হচ্ছে না। উপরন্তু রেন্টাল, কুইক রেন্টালের নামে জনগণের পকেট কেটে কতিপয় তোষণ নীতি অব্যাহত রেখেছে। শুধু তাই নয়, ব্যাংকসহ আর্থিকখাতের পরিস্থিতি গভীর সংকটে নিপতিত।
তারা বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের হাঁকডাক সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। দ্রব্যমূল্যের বেপরোয়া ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হচ্ছে। জনগণের পকেট হাতিয়ে নেওয়া দুর্বৃত্তদের স্বার্থ রক্ষার্থেই কাজ করছে সরকার। সে কারণে সরকারের এই লুণ্ঠন ও কতিপয় তোষণ নীতির মাশুল জনগণ দেবে না। গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সাভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।