দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেয়া অপশক্তিকে প্রত্যাখ্যান করে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবি পার্টি। সরকারের পদত্যাগ ও প্রহসনমূলক নির্বাচন বর্জনে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি এবং ৭ই জানুয়ারিকে ইতিহাসের কালোদিন হিসেবে চিহ্নিত করে পুরোদিন ‘স্বেচ্ছায় প্রতিবাদী লকডাউন’ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছে দলটি। শনিবার সকালে বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী। দলের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।
সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে দাফন করার আয়োজন চলছে। এই নির্বাচন জনগণের কোন নির্বাচন নয়। এটি আওয়ামী লীগ, ডামি আওয়ামী লীগ, সরকারের পদলেহনকারী প্রশাসন ও সংস্থা সমূহের যৌথ নির্বাচন। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দেখছেন একজন প্রার্থী নিজে ঘোষণা করেছেন তিনি ভারতের প্রার্থী। তারপরও নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এটা কত বড় তামাশা! আমরা এই নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। যতদিন জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হবে এবি পার্টি আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এই সরকার দেশের জনগণের অধিকার, বাক্ স্বাধীনতা ও স্বাধীন মতামতের মাধ্যমে সরকার গঠনের ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার পরম্পরায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত করে আগামীকাল আরেকটি সাজানো নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে, যার নাম ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
একজনের একক সিদ্ধান্তে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। সরকারের লুটপাট অব্যাহত রাখার লাইসেন্স নবায়নের এই নির্বাচনকে দেশের জনগণ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা জনগণকে অনুরোধ করছি এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করুন। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন শুরু থেকেই আমাদের পুরো আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ, অহিংস এবং নিয়মতান্ত্রিক। কিন্তু সরকার পদে পদে বাধা দিয়ে সন্ত্রাসী ও পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে। পুলিশি অনুমতির নামে সমাবেশ করতে না দেয়া, রাস্তায় রাস্তায় তল্লাশি, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমার বন্ধ করে দিয়ে বিরোধীদের সমাবেশে জনসমাগম ঠেকানো, বিরোধীদলের কর্মসূচির দিন পাল্টা কর্মসূচি ডাকা, হামলা, গুম, খুন, গায়েবি মামলা ইত্যাদি হেন কোন কাজ নেই যা সরকারি দল করেনি। সবশেষ তারা নিজেরা নানা নাশকতা করে বিরোধী রাজনৈতিকদল গুলোকে দায়ী করার চেষ্টা করছে।
মঞ্জু আরও বলেন; পুলিশ ও আওয়ামী লীগের এতসব তাণ্ডব এবং মানুষকে জোর করে ভয় ভীতি দেখিয়ে ভোট কেন্দ্রে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও ৫ থেকে ১০ শতাংশের বেশি লোক ভোট কেন্দ্রে যাবে না। তিনি বলেন, শোষিত মজলুমের বিজয় ও অপশাসনের করুণ পরিণতি ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে অচিরেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন।