দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নতুন বছর যাতে শান্তিপূর্ণ হয়। আমরা সুন্দর দেশ গড়ে তুলি, সুন্দরভাবে বাস করি, কেউ যাতে নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, শঙ্কার মধ্যে না থাকি। শঙ্কামুক্তভাবে জীবনযাপন করি, আইনের শাসনের মধ্যে জীবনযাপন করি। মঙ্গলবার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, নতুন বছরে আমরা যেন নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করতে পারি। নতুন বছরে তরুণ সম্প্রদায়কে যাতে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখাতে পারি। শান্তিময় পরিবেশে বসবাস করতে পারি। আমরা সব জাতিকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি, সেটার জন্য সবাই মিলে একত্রে চেষ্টা করি, এটাই দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন। আমরা এসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই, যার যার মতো করে বিশেষ করে তরুণদের জীবনে যে স্বপ্ন এবং আরও স্বপ্ন দেখবে। বিভিন্ন মামলায় মাসে দু’বার হাজিরা প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমার তো কিছু করার নেই, আদালতের আদেশ তো হাজির হতেই হবে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রতিষ্ঠানটির তিন শীর্ষ কর্মকর্তার স্থায়ী জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। তবে ২৩শে মে পর্যন্ত তাদের জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। তাকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান। অপরদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আবেদনের উপরে শুনানি শেষে ২৩শে মে পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার জামিনের মেয়াদ বাড়ান ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
গত ১লা জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা এই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। গত ২৮শে জানুয়ারি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আপিল সেদিন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। তৃতীয় শ্রম আদালতের দেয়া রায় ও আদেশ চলতি বছরের ৩রা মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ধার্য তারিখ গত ৩রা মার্চ আপিল ট্রাইব্যুনাল চারজনের জামিনের মেয়াদ ১৬ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ান। সেই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ১৬ই এপ্রিল তারিখ রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।